ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাগুরায় সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত‌্যু: তিন দিন পর মামলা

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:২২, ১৮ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ০৮:২০, ১৯ অক্টোবর ২০২১
মাগুরায় সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত‌্যু: তিন দিন পর মামলা

মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই সম্ভাব্য সদস্য পদপ্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় এক পক্ষ মামলা করেছে। ওই ঘটনায় কবির মোল্লা (৫২), সবুর মোল্লা (৫০) নামের দুই ভাই ও তাদের চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা (৫৬) এবং অপর পক্ষের ইমরান মোল্লা (২৫) নিহত হন।

সংঘর্ষের তিন দিন পর সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে কবির ও সবুরের ছোট ভাই মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন।

মামলায় মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও তার পাঁচ ভাইসহ ৬৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যাসহ অন্তত ১০টি ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। সংঘর্ষে নিহত ইমরান বর্তমান ইউপি সদস্য নজরুলের সমর্থক ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে জগদল ইউনিয়নের সৈয়দ রূপাটি দমদম পাড়ার বাসিন্দা সবুর মোল্লা তার দুই ভাইসহ কয়েকজনকে নিয়ে জগদল দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা আবদুর রহিম মাস্টারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে হাকিম নামের এক ব্যক্তির চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওত পেতে থাকা অজ্ঞাত ১০-১৫ জন তাদের ঘিরে ধরেন। এর পর ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে তার পাঁচ ভাইসহ অন্যরা বাদীর বড় ভাইদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। রামদা, চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই কবির মোল্লা ও সবুর মোল্লা নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান রহমান মোল্লা। হামলায় বাদীর আরও এক ভাই ও এক ভাতিজা গুরুতর আহত হন। আহত ওই দুজনকে ঢাকা ও ফরিদপুরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মাগুরা সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে বর্তমান ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও সৈয়দ হাসান মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঘটনার দিন সৈয়দ হাসানের বড় ভাই আবদুর রহিম মাস্টারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন সবুর ও তার ভাইরা। দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য নজরুল ও স্থানীয় মাতবর সবুর মোল্লার মধ্যে বিরোধ চলছিল। ২০০৩ সালে প্রতিপক্ষের হামলায় সবুর মোল্লার বড় ভাই জরিফ মোল্লা নিহত হন। ওই ঘটনায় করা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন ইউপি সদস্য নজরুল ও তার লোকজন। এবারের নির্বাচনে সবুর মোল্লা সম্ভাব্য প্রার্থী সৈয়দ হাসানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। এসব কারণেই হামলা ও সংঘর্ষ ঘটে।

সংঘর্ষের পর থেকেই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। লুটপাট ও হামলার আতঙ্কে শনিবার (১৬ অক্টোবর) অনেককে ঘর থেকে মালামাল সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। বিবদমান দুটি পক্ষের বেশির ভাগের বাড়ি গিয়ে কোনো পুরুষ সদস্যকে পাওয়া যায়নি। নারীরা বাড়িতে থাকলেও তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুরুল আলম জানান, ইতোমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে, নিহত ইমরানের পরিবারের পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

শাহীন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়