চোর সন্দেহে যুবককে অমানবিকভাবে পেটালেন চেয়ারম্যান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাইকেল চোর সন্দেহে শহিদুল ইসলাম নামে (২৮) এক ব্যক্তিকে অমানবিকভাবে মারধর করেছেন সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদ রানা টিপু।
ইউনিয়ন পরিষদে একটি ঘরে গত রোববার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে শহিদুলকে মারধর করেন চেয়ারম্যান টিপু। মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়।
ভুক্তভোগী শহিদুল সদর উপজেলার শাজাহানপুর ইউনিয়নের বিলকান্দি এলাকার মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে।
ভুক্তভোগী শহিদুল বলেন, ‘‘রোববার বিকেলে ব্যক্তিগত কাজে চরবাগডাঙ্গা বাজারে গিয়েছিলাম। বাজারে আমার গায়ে ধাক্কা লেগে একটি সাইকেল পড়ে যায়। সাইকেলটি তুলতে গেলে চোর সন্দেহে মারধর শুরু করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয়রা আমাকে টিপু চেয়্যারমানের সহযোগী জুয়েলের হাতে তুলে দেয়। জুয়েল আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়।
‘সেখানে টিপু চেয়ারম্যান কারো কোনো কথা না শুনেই আমার পা ও গলা গামছা দিয়ে বেঁধে দেয়। তারপর লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে। এসময় তার সহোযোগী নুরুল, বাবলু ও ভুলু চেয়ারম্যানকে পেটাতে উদ্বুদ্ধ করেন। তারা বিনাদোষে আমাকে মেরেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
ভুক্তভোগীর ভাই সেরাজুল বলেন, ‘আমার ভাই শহিদুলকে নিষ্ঠুরভাবে মারধর করা হয়েছে। একজন জন প্রতিনিধি হয়ে বিনা কারণে এমন আচরণ মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইউনিয়নের এক বাসিন্দা জানান, এর আগেও চোর সন্দেহে কয়েক জনকে পরিষদে তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তিনি এলাকায় একটি কিশোর গ্যাংয়ের দেখভাল করেন। তার অত্যাচারের এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। লোকজন মুখ খুলতে ভয় পায়।
চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক জানান, চোর সন্দেহে শহিদুলকে বেধড়ক পেটানোর ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে কোনো ব্যক্তিকে নির্যাতন করা ঠিক না। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এদিকে নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে অভিযুক্ত টিপু চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষিপ্ত জনগণকে শান্ত করতে তাদের মধ্য থেকে শহিদুলকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে আমার লোকজন। তাকে শাসন করতে দুয়েকটা লাঠির বাড়ি মারতে পারি না? আমার কি সে অধিকার নাই?’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান জানান, ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ দিলে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে।
শিয়াম/সনি
আরো পড়ুন