ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাগুরায় সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের ঘটনায় ৫২ জনকে আসামি করে আরেক পক্ষের মামলা

মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৩১, ২১ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ০২:৩৫, ২১ অক্টোবর ২০২১
মাগুরায় সংঘর্ষে ৪ জন নিহতের ঘটনায় ৫২ জনকে আসামি করে আরেক পক্ষের মামলা

মাগুরা সদর উপজেলার জগদল গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সম্ভাব্য দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় অপর একটি পক্ষ মামলা করেছে। 

ঘটনার প্রায় পাঁচ দিন পর বুধবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে মাগুরা সদর থানায় হত্যা মামলাটি করেন নিহত ইমরান মোল্লার (২৫) মা ফরিদা খাতুন। নিহত ইমরান জগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের সমর্থক ছিলেন। 

মাগুরা সদর থানা সূত্র জানায়, সংঘর্ষে নিহত যুবক ইমরানের মা বাদী হয়ে ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ১০–১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এই মামলায় দুদু মোল্লাকে এক নম্বর আসামি করা হয়। তিনি অপর পক্ষে নিহত মাতুব্বর সবুর মোল্লার বড় ভাই।

একই সংঘর্ষে অপর পক্ষের দুইভাই কবির মোল্লা (৫২), সবুর মোল্লা (৫০) ও তাদের চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা (৫৬) নিহতের ঘটনায় গত সোমবার (১৮ অক্টোবর) সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। ওই মামলায় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ ৬৮ জনকে আসামি করা হয়।

এতে চার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুটি মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ালো ১২০ জনে। অজ্ঞাত আসামি আছেন অনেকেই।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইমরান নিহতের ঘটনায় তার মায়ের করা মামলায় ৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে। যেখানে অপর পক্ষে নিহত মাতবর সবুর মোল্লার বড় ভাই দুদু মোল্লাকে এক নম্বর আসামি করা হয়।

আসামিদের মধ্যে ইউপি নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়া সৈয়দ হাসান ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল ইসলাম ওরফে নুজুর নাম আছে। মামলার আসামিদের বেশির ভাগই নিহত মাতবর সবুর মোল্লার পরিবারের সদস্য ও তাদের অনুসারী।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন নিহত ইমরান নিজেদের মাছের ঘেরে খাবার দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি থেকে ২০০ গজ পশ্চিমে খালেক মোল্লার বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার ওপর তার ওপর রাম দা, ছ্যান দাসহ বিভিন্ন রকম দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান আসামিরা।

এজাহারে মামলার বাদী দাবি করেছেন, আসামিদের সঙ্গে তাদের আগে থেকেই গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এর সূত্র ধরেই আসামিরা বাদীর ছেলের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেন।

এদিকে সংঘর্ষের পর থেকেই জগদল গ্রামের একটি অংশ পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। হামলা ও লুটপাটের আশঙ্কায় অনেকেই বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) জগদল এলাকায় গিয়ে থমথমে পরিস্থিতি লক্ষ করা গেছে। বেশির ভাগ বাড়িতে কেবল বৃদ্ধ নারী সদস্যদের পাওয়া গেছে। অনেক বাড়ি তালাবদ্ধ।

পুলিশ বলছে, উভয় পক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জগদল এলাকার পাঁচটি জায়গায় পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। হামলা ও লুটপাটের আতঙ্কে প্রথম দিকে কিছু মানুষ মালামাল সরিয়ে নিলেও পরবর্তী সময়ে কাউকে কিছু নিতে দেয়নি পুলিশ। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।

মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, এই মামলায় (ইমরান হত্যা) এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, অপর পক্ষের করা মামলায় চার আসামিকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা কারাগারে আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে জগদল দক্ষিণপাড়ায় দুই সদস্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

শাহীন/আমিনুল

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়