ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত স্থানীয়রা 

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৩ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ০৯:৩৯, ২৩ অক্টোবর ২০২১
রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষ, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত স্থানীয়রা 

রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পে বেড়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড

আধিপত্য কিংবা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ লেগেই থাকে। ফলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশেপাশে বসবাসরত স্থানীয়রাও আতঙ্কের মধ্যেই রয়েছেন। রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল ছোড়া ও গোলাগুলির কারণে অনেক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ হত্যার পর ক্যাম্পগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে।  

উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পের পাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘রোহিঙ্গা আসার পর থেকে আমরা শান্তিতে নাই। মানবিক কারণে এদেশে তাদের স্থান দেওয়া হলেও এখন আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। প্রতিনিয়ত তাদের হুমকি-ধামকিতে রয়েছি আমরা। এমনকি তাদের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলির বিকট শব্দে আমাদের ছোট ছোট ভাই বোন ও ছেলে মেয়েরা ভয় পায়। তাদের লেখাপড়ার সমস্যা হয়। সব মিলিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই আমাদের দিন যাচ্ছে।’

কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দা জামাল হোসাইন বলেন, ‘আমার বাড়ি কাঁটাতারের বাইরে। অথচ এখানে এসেও রোহিঙ্গারা মাস্তানি করে। গাছ থেকে নারকেল, সুপারি পেড়ে নিয়ে যায়। হাঁস-মুরগি ধরে নিয়ে যায়। আমরা কিছু বললে বাড়িতে ইট-পাটকেল ছোড়ে। বলতে গেলে তাদের কাছে আমরা অসহায়। রাতদিন তাদের মারামারি, মুখোমুখি সংঘর্ষ আমাদের আতঙ্কে রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোলাগুলির শব্দে আমরা ঘুমাতে পারি না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত ঘটে। এমন হলে আমরা এখানে বসবাস করতে পারবো না। তারা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের উপরও সন্ত্রাসী হামলা করতে পারে। তাই তাদেরকে আয়ত্তে রাখা দরকার।’

উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অপরাধ, চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, গুম, মাদক পাচার ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপর্কমের সঙ্গে জড়িত থাকার যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন তারা স্থানীয়দের উপর হামলা করছে। তাদের হাতে খুন হয়েছে স্থানীয় অনেক লোকজন। স্থানীয়দের গুম করে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে তারা। এমনকি ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ক্ষতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। এক কথায় তাদের কাছে  স্থানীয়রা নিরাপদ নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক্যাম্পগুলোর আশেপাশে স্থানীয়দের বসবাস অযোগ্য এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।’

রোহিঙ্গাদের জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সামাজিক অর্থনৈতিক কারণে প্রতিনিয়ত তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যাক, এটাই কামনা স্থানীয়দের।

কক্সবাজার/মাসুদ/ইভা 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়