ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষকে অব্যাহতি, বাস্তবায়নে গড়িমসি

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৮, ২৪ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ১৩:০৫, ২৪ অক্টোবর ২০২১
দুর্নীতির অভিযোগে কলেজ অধ্যক্ষকে অব্যাহতি, বাস্তবায়নে গড়িমসি

বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে পাবনার শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খানকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। 

গত ০৫ অক্টোবর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। যার স্মারক নম্বর ০৭ (র-৬৪৯) বাতী: বি:/ক:প:/কোড-২১২৬/৫১৩৫৭। কিন্তু সেই আদেশ বাস্তবায়নে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (২৪ অক্টোবর) সকালে শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের প্রভাষক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগকারী আব্দুল কাদের বিশ্বাস মোবাইলে এ তথ্য জানান। 

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো চিঠি থেকে জানা গেছে, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের অবৈধ ও বেআইনীভাবে ভারপ্রাপ্ত  অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহন করেন আব্দুস সামাদ খান। এরপর তিনি একই উপায়ে নিজেকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ ও পুনরায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নানা ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সুনাম এবং ভাবমূর্তি ধ্বংস করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন আব্দুস সামাদ খান। এর প্রতিকার চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাছে আবেদন করেন শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল কাদের বিশ্বাস।

আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকুরীর শর্তাবলীর রেগুলেশন (সংশোধিত)-২০১৯-এর ৪ (ক) (২) লংঘন করে পাঁচ বছরের অধিক সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করায় তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। 

একই সঙ্গে বিধি অনুযায়ী ৫ জন জ্যেষ্ঠতম শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব প্রদান করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করার জন্য কলেজ পরিচলনা পর্ষদের সভাপতিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগকারী প্রভাষক আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের কলেজটি ডিগ্রি থেকে বর্তমানে অনার্স কলেজ।  আব্দুস সামাদ খান কলেজের কারিগরি শাখার বাংলা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি কখনই উপাধ্যক্ষ বা অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাবার যোগ্য নন। উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষকের ১২ বছর এবং অধ্যক্ষ পদে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। তিনি তার কোনো যোগ্যতার মধ্যেই পড়েন না। মূলত ৬ বছর আগে অনিয়ম-দুর্নীতি করে গোপনে অখ্যাত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি নিয়োগ নিয়েছেন।’

আব্দুল কাদের বিশ্বাস আরো বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আব্দুস সামাদ খানতে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও গত ২১ দিনে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি এখনও বহাল তবিয়তে তার পদ ধরে রেখেছেন। কলেজ পরিচালনা পর্ষদ কেন তাকে অব্যাহতি দিতে গড়িমসি করছে তা বোধগম্য নয়।’

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সোহেল হাসান শাহীন। তিনি বলেন, ‘আদেশে নির্দিষ্ট করে বলা নেই যে কতদিনের মধ্যে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দায়িত্বে ছিলেন, তার আগে তিনি উপাধ্যক্ষও রয়েছেন। এ বিষয়ে কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি আলোচনা করতে ঢাকায় এসেছি। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারবো।’

অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খান বলেন, অধ্যক্ষের অবর্তমানে আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে যে অব্যাহতি দিয়েছে এখনো সে বিষয়ে কোনো চিঠি পাইনি। কলেজ পরিচালনা পর্ষদও আমাকে অব্যাহতির বিষয়ে কিছু জানায়নি।’

শাহীন/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়