ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ইলিশ শিকারে মধ্যরাত থেকে মেঘনায় নামছে জেলেরা

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৫ অক্টোবর ২০২১  
ইলিশ শিকারে মধ্যরাত থেকে মেঘনায় নামছে জেলেরা

ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আজ সোমবার (২৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে শেষ হবে। রাত ১২টার পর থেকে নির্বিঘ্নে ইলিশ শিকার করতে পারবে জেলেরা। প্রজনন নিরাপদ করার জন্য ৩ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। মৎস্য বিভাগ বলছে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ৯০ ভাগ সফল হয়েছে তারা। 

শীত মৌসুম কাছাকাছি চলে আসায় নদীতে মাছের অকাল থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক জেলে। ফলে মেঘনায় মাছ শিকারে নিয়োজিত কিছু জেলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকবেন বলেও জানা গেছে।

সদর উপজেলার মজু চৌধুরী হাট এলাকার জেলে ইয়াকুব আলী বলেন, ‘আজ রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আমরা নদীতে নামবো। এরই মধ্যে জাল এবং নৌকা মেরামত করে নিয়েছি। একটি ট্রলারে আমরা আটজন ইলিশ শিকার করি।’

তিনি জানান, গত ২৪ অক্টোবর তিনি খাদ্য সহায়তার চাল পেয়েছেন। এ কয়েকদিন পরিবারপরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করেছেন। মাছ ধরা শুরু হলে কষ্ট কিছুটা কমবে।

চররমনী মোহন এলাকার জেলে এবং ট্রলার মালিক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর জাল গুটিয়ে নদী থেকে উঠে পড়েছি। সামনে শীত চলে আসছে। এ সময়টাতে মাছ কম ধরা পড়ে। নৌকার জ্বালানি এবং আনুষঙ্গিক খরচ বাদ গেলে তেমন পোষাবে না। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এ মৌসুমে নদীতে মাছ শিকারে যাবো না।’   

কমলনগর উপজেলার মতির হাট মাছঘাটের সভাপতি মো. আবদুল খালেক বলেন, ‘নদীতে নামার জন্য জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আমরাও মাছঘাটের বাক্সগুলোকে ধুয়েমুছে পরিষ্কার করে নিয়েছি। আশাকরি মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকে ঘাটে মাছ বিক্রি শুরু হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘাটে ৫শ থেকে ৬শ মাছ শিকারের নৌকা আছে। তবে এ মৌসুমে সবগুলো নৌকা নদীতে যাবে না। প্রায় দুই শতাধিক নৌকার মাঝি ও জেলে জাল এবং নৌকা উঠিয়ে ফেলেছেন।  তারা ইটভাটাসহ অন্য পেশায় ঢুকে গেছে।’ 

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরে ৪৯ হাজার ৯৩৩ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে তালিকাভূক্ত ৩৮ হাজার ৭৩৬ জন জেলেকে ভিজিএফের আওতায় ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকাকালীন। তবে বেসরকারি একটি এনজিও সংস্থার হিসাবে লক্ষ্মীপুরে প্রায় ৫৪ হাজারের বেশি জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকারে নিয়োজিত রয়েছে।

চররমনী মোহনের সাবেক মেম্বার দুলাল হোসেন বলেন, ‘আমার এলাকায় প্রায় দুইশত জেলে রয়েছে। তারা সাগর বা গভীর নদীতে মাছ শিকার করে। মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুর অংশ অগভীর হওয়ায় ইলিশ মাছ তেমন একটা ধরা পড়ে না। তাই জেলেরা নোয়াখালীর সুবর্ণচর এবং হাতিয়া এলাকার দিকে মাছ শিকার করতে চলে যাবে।’   

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘২২ দিনে নিষেধাজ্ঞার সময় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে মৎস্য বিভাগ নিয়মিত নদীতে অভিযান পরিচালনা করেছে। আমরা জেলেদের নিষিদ্ধ সময়ে মাছ শিকার না করতে সচেতন করেছি। তাই এবার অভিযান অনেকটা সফল হয়েছে। আশাকরি মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পেরেছে।’
 

লিটন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়