অকেজো ৫ কোটি টাকার সড়কবাতি, দুর্ভোগ
বেলাল রিজভী, মাদারীপুর || রাইজিংবিডি.কম
মাদারীপুরের রাজৈরে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্তে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কে ৫ শতাধিক সৌরবাতি স্থাপন করা করে পৌরসভা। কিন্তু স্থাপিত ওই সব বাতির অধিকাংশই অকেজো হয়ে আছে বছরের পর বছর। এতে করে এলাকাজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি, ছিনতাইসহ নান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। ফলে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পৌর মেয়রের দাবি, জনবল সংকটে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এসব সড়ক বাতি।
রাজৈর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রাজৈর পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার সড়কে ৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫১৭টি সৌরবাতি স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে বাতিগুলো স্থাপন করে পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন। কিন্তু ছয় মাসের মাথায় বাতিগুলো অকেজো হতে শুরু হরে। এরই মধ্যে বেশকিছু সড়কের বাতি ভেঙ্গে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। রাজৈর পৌরসভায় ২৭ কিলোমিটার পাকা, ৩০ কিলোমিটার আঁধা পাকা ও ১৮ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। এই সড়কে পর্যাপ্ত বাতি না থাকায় চুরি, ছিনতাইসহ অপরাধ কর্মকান্ড বাড়ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নিয়মিত পৌরকর পরিশোধ করেও নাগরিক সুবিধা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা। সৌরবাতি ঠিকভাবে জ্বলছে কিনা এটা দেখার দায়িত্ব পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের। কিন্তু বাতিগুলো স্থাপনের পর থেকে সেগুলোর আর কোনো খোঁজ রাখেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারের মধ্যেই সড়কগুলোতে চলাফেরা করছেন পৌরবাসী। এতে বাড়ছে দুর্ভোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আব্দুর রহিম বলেন, ‘হেই যে সৌরবাতি লাগাই গেছে আর কাউরে দেহি নাই। এহন বাতিও জ্বলে না। নষ্ট হইছে কেউ সাড়তেও আহে না। আন্দারেই আমাগো চলাচল করতে হয়।’
আরেক বাসিন্দা কহিনুর বেগম বলেন, ‘সরকার কয়েক কোটি টাকা খরচ করে এটা করছে। কিন্তু এই বাতিগুলো আমাদের কোনো কাজেই আসছে না।’
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘সরকার প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করে ৫১৭টি সৌরবাতি স্থাপন করেছে। হিসেব করলে এর এক একটি বাতির দাম পড়েছে প্রায় লাখ টাকা। অথচ স্থাপনের কিছু দিন পড়েই এগুলো অকেজো হয়ে গেছে। মাঝখান থেকে সরকারের ৫ কোটি টাকা গচ্ছা গেছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাভাবিক ভাবে একটি সৌরবাতি প্রকার ভেদে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা সম্ভব। বাতি স্থাপনে যে খরচ করা হয়েছে সেটা অস্বাভাবিক। আমরা চাই বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। জনগণের সুবিধার্থে বাতিগুলো আবারো সচল করা হোক।’
রাজৈর পৌর মেয়র নাজমা রশিদের দাবি, ‘জনবল সংকট থাকায় সড়কে সৌরবাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। ’অস্বাভাবিক খরচের বিষয় তিনি বলেন, ‘যদি অস্বাভাবিক খরচ হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। অস্বাভাবিক খরচ হলে এর দায়ভার আগে যারা দায়িত্বশীল ছিলেন তাদের। ‘
এ ব্যপারে রাজৈর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র শামীম নেওয়াজ মুন্সী বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের অর্থায়নে এটি স্থাপন করে পল্লী দারিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন। এখানে আমাদের তেমন কোন সম্পৃক্ততা নেই। পৌরসভা শুধু উপকারভোগী। ‘
মাসুদ
আরো পড়ুন