ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও ফসলি জমির মাটি, হুমকিতে পরিবেশ

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০০, ১৬ নভেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৩:০৩, ১৬ নভেম্বর ২০২১
ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও ফসলি জমির মাটি, হুমকিতে পরিবেশ

হবিগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটের ভাটা। ফসলি জমির মাটি ও বনের গাছ উজাড় করে চলছে ইট পোড়ানোর কাজ। এতে ভয়াবহ দূষণের শিকার হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে রোগ-বালাই। পাশাপাশি বিনষ্ট হচ্ছে সরকারি রাস্তা, উর্বরতা হারাচ্ছে কৃষি জমি। 

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ থাকলেও রহস্যজনক কারণে নির্বিকার সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, হবিগঞ্জ জেলায় গড়ে উঠেছে ১২০ ইটের ভাটা। এদের অধিকাংশরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বিশেষ করে জেলার বাহুবল ও চুনারুঘাট উপজেলায় ইটভাটার সংখ্যা ৬৫। লোকালয়ের আশপাশে গড়ে ওঠা এসব ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ, বাড়ছে রোগ-বালাই। শুধু তাই নয়, এসব ইটভাটায় মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের কারণে ধ্বংস হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি রাস্তা। 

ইটের ভাটায় ফসলি জমির মাটি ব্যবহারের কারণে উর্বরতা হারাচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমি। এ ছাড়া ইটভাটাগুলোতে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে। ফলে জ্বালানির চাহিদা মেটাতে উজাড় করা হচ্ছে এলাকার গাছগাছালি ও পাহাড়ি বনাঞ্চল।

সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অথবা নদীতীরে পতিত দেড় একর ভূমিতে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। সরকারি সড়ক দিয়ে নয়, বরং ইটভাটার নিজস্ব রাস্তা দিয়ে চলবে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর। সে সঙ্গে ইটভাটায় খনন করতে হবে পুকুর। অথচ বাস্তবতা এর কোনো কিছুই মানছেন না ভাটা মালিকরা। মাটি বহনের ট্রাক্টরগুলো অনেক সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পর্যন্ত চলাচল করে। এতে জনসাধারণসহ যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ জেলায় রয়েছে ৯৯ টি ইটভাটা। তবে বেসরকারি হিসাবে জেলায় ইটভাটার সংখ্যা ১২০টি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এসব অবৈধ ইটভাটায় মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও নেওয়া হচ্ছে না কঠোর ব্যবস্থা। যে কারণে থামছে না ইটভাটা কর্তৃপক্ষের আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় তালিকাভুক্ত ৯৯টি ইটভাটা রয়েছে। এর বাইরে অবৈধ ইটভাটা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তালিকাভুক্ত ইটভাটাগুলোর লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, নিময়নীতি মেনে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। এখানে অনেকেই নিজেদের সুবিধামতে ইটভাটা নির্মাণ করে ব্যবসা করছেন। এ কারণে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ।

পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, ইটভাটায় যারা কাঠ পোড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

মামুন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়