১০০ টাকা খরচ করে মিললো পুলিশের চাকরি 

সাতক্ষীরায় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ সম্পন্ন হলো পুলিশের কনস্টেবল পদে। সাড়ে ৬ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে নিয়োগ পেয়েছেন ৪১ জন।

নিয়োগকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি,সবধরনের প্রভাবমুক্তভাবে যথাযথ যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের। আর নিয়োগ পাওয়া কনস্টেবলরা পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে উচ্ছ্বসিত।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দেবনগর গ্রামের নাজমা খাতুন দুই বোনের মধ্যে তিনি বড়। তিনি বলেন, ‘ভাই না থাকাতে প্রতিবেশিরা বাবাকে প্রায়ই বলত বিয়ে দিতে। কিন্তু আমি বাবাকে বলতাম, আমাকে নিয়ে তোমাকে তাড়াহুড়ো করতে হবে না। আমি ঠিকই তোমাদের উপার্জন করে খাওয়াবো। বাবা বলতেন, পুলিশের চাকরি পেতে গেলেতো টাকা লাগে। আজকে বাবার এই কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। আমি নিজ যোগ্যতায় মাত্র ১০০ টাকায় পুলিশ বাহিনীতে চাকরি পেয়েছি।’

জেলার কলারোয়া উপজেলার খলসি গ্রামের আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘ছেলে আজিজুল ইসলামকে নিয়ে খুবই হতাশ ছিলাম। ও কলেজে পড়ে। ভাবতাম, ১৫/২০ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। স্বামী যা আয় করে,তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কিন্তু আজ ১০০ টাকা খরচ করে তার চাকরি হয়েছে। খুব ভালো লাগছে।’

তিনি জানান, পুশিশের চাকরি বিনা পয়সাতেও হয়। ঘুষ ও তদবির ছাড়াই চাকরি পাওয়াতে খুশি এই অভিভাবকেরা। আজ যোগ্যতার ভিত্তিতে সাতক্ষীরা জেলায় ৪১ জনের চাকরি দেওয়ায় নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। জেলার ৪১ পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলায় ৪১টি পদের বিপরীতে আবেদন করেছিলেন সাড়ে ছয় হাজার জন। এর মধ্যে মাঠ পরীক্ষায় যোগ্যতা অর্জন করেন ১ হাজার ৬শ ৪০ জন। তার মধ্যে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন ৩শ ৮ জন। উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১শ ১৩ জন। ২৪ নভেম্বর মৌখিক ও মনস্তাত্বিক পরীক্ষায় ৪১ জনকে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ করা হয়। ফলাফল ঘোষিত হয় সোমবার সন্ধ্যার দিকে। চাকরি নামক সোনার হরিণ পেয়ে ব্যাপক খুশি নিয়োগ পাওয়া কনস্টেবলরা। তাদের আশা, চাকরির উপার্জনে পরিবারের মুখে হাসি ফুটাতে পারবেন তারা।

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৪১ জনকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনুসরণ করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোটা, পোষ্য কোটা ও নারী কোটা। মাত্র ১শ’ টাকা খরচ করে চাকরি পেয়েছে ৪১ জন তরুণ-তরুণী।