ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হলো না আদিত্যের

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৫, ৩ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১১:৫১, ৩ ডিসেম্বর ২০২১
এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হলো না আদিত্যের

আদিত্যের স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে দেশসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করবে। দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে সেনাবাহিনীর গর্বিত সদস্য হবে। সেভাবে নিজেকে প্রস্তুতও করছিলো সে।

বুক ভরা আশা নিয়ে ছেলে আদিত্য বর্মণকে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন তার পিতা অবিনাশ রায়ও। অনেক কষ্ট করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার গণ্ডি পার করিয়ে ছেলেকে ভর্তি করান কলেজে। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিলো আদিত্যের। কিন্তু পরীক্ষার তিনদিন আগে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান আদিত্য। নিমিষেই চুরমার হয়ে যায় একটি পরিবারের সব স্বপ্ন।

আদিত্যের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের ঘিডোব গ্রামে। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান সে। ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উজ্জ্বলকোঠা উচ্চবিদ্যালয়ে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে জেএসসি এবং এসএসসি পাস করার পর লোহাগাড়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি মানবিক শাখায় ভর্তি হয় আদিত্য। সেখান থেকেই এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিলো তার। কিন্তু ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটের ফলকে কেন্দ্র করে জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধলে দেখতে গিয়ে প্রাণ হারায় আদিত্যসহ তিনজন। পণ্ড হয়ে যায় সবকিছু।

আদিত্যের বাবা অবিনাশ জানান, গোলাগুলির সময় তার ছেলে আদিত্য বাড়িতে ভাত খাচ্ছিল। গুলির শব্দ শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলের দিকে যেতেই তার মাথায় গুলি লাগে। গুরুতর অবস্থায় রংপুরে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় সে।

আদিত্যর মা পার্বতী রানী রায় জানান, তার ছেলের স্বপ্ন ছিল- সেনাবাহিনীর সদস্য হওয়ার। তারাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন ছেলে লেখাপড়া করে সেনাবাহিনীতে যোগ দিবে। বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করবে। সে আশা নিরাশায় পরিণত হলো।

আদিত্যের একমাত্র ছোট ভাই নবম শ্রেণির স্কুলছাত্র উপাচার্য বর্মণ জানান, ভাইয়ের এমন মৃত্যুতে সে মানসিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।

লোহাগাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক বলেন, অত্যন্ত হাসি-খুশি ও মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল আদিত্য বর্মণ। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার, কিন্তু সেটা আর হলো না। আদিত্যের জন্য আমরা সবাই শোকাহত।

মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়