ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

মৃত্যু শয্যায় মুক্তিযোদ্ধা ছকেল, খোঁজ নেয়নি কেউ

জাহিদুল হক চন্দন, মানিকগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ৫ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ২১:৪৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
মৃত্যু শয্যায় মুক্তিযোদ্ধা ছকেল, খোঁজ নেয়নি কেউ

বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। বুক চিতিয়ে লড়েছেন পাক সেনাদের বিরুদ্ধে। যুদ্ধ করতে গিয়ে বুকে দুটি গুলি লাগলেও থেমে থাকেননি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার গাড়াদিয়া গ্রামের মো. ছকেল উদ্দিন।

চার বছর আগে শরীরে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে ছকেল উদ্দিনের। সন্তানদের দেওয়া টাকায় অপারেশনও করা হয়। অপারেশনের পরে অর্থাভাবে কোনোরকমে চিকিৎসা চললেও এখন আর কুল-কিনারা পাচ্ছেন না তিনি। অর্থাভাবে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। 

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৬ষ্ঠ তলার ১৭ নম্বর শয্যায় ভর্তি রয়েছেন ছকেল। চিকিৎসকরা দ্রুত ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিলেও আর্থিক সংকটে এ হাসপাতালে রয়ে গেছেন তিনি। তবে স্ত্রী, ছেলের বউ ও সন্তানেরা সার্বক্ষণিকভাবে তার পাশে রয়েছেন। 

মুক্তিযোদ্ধা মো. ছকেল উদ্দিন বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু এখন অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। পাশে পরিবার থাকলেও আর কেউ খোঁজ নেয়নি।’ 

ছোট ছেলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘ক্যান্সার ধরা পড়ার পর কোনোরকমে টাকার ব্যবস্থা করে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর প্রতি সপ্তাহে দুইবার থেরাপি করাতে ঢাকা যেতে হতো। প্রতিটি থেরাপিতে ১৪ হাজার টাকা খরচ হতো। এছাড়াও যাতায়াত, ওষুধ ও থাকা-খাওয়া নিয়ে আরও খরচ হতো। এখন পর্যন্ত তার চিকিৎসায় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। অর্থাভাবে এখন থেরাপিও ঠিকমতো দেওয়া যাচ্ছে না। তার চার ছেলের তিন ছেলে বিদেশে। এক ছেলে রাজবাড়ীতে পুলিশে চাকরি করেন। পরিবারের সবার আর্থিক সহযোগিতায় কোনোরকমে চিকিৎসা চলছে।’  

বড় ছেলে মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘ওমান থেকে ছুটিতে দেশে এসেছি। বাবাকে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সাধ্য অনুযায়ী চিকিৎসা করানো হয়েছে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। দেশে সঠিক চিকিৎসা পেলে বাবা সুস্থ হবেন। বিষয়টি বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের জানালেও কেউ খোঁজ খবর রাখেননি।’  

সরকারি বা ব্যক্তি পর্যায়ে সহযোগিতার জন্য (০১৭৪১৩৮৫৪৭৪,০১৩০২৮১৪১৯৯) এই নম্বরে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন তিনি।  

হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ছকেলকে হাসপাতালের সক্ষমতা অনুযায়ী সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে উনাকে ঢাকায় বিশেষায়িত কোনো হাসপতালে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা করাতে পারলে ভালো হতো।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ‘কেউ এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। ছকেলের চিকিৎসার জন্য জেলা পরিষদে আবেদন করলে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  
 

/বকুল/ 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়