ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

জালিয়াতির অভিযোগে এনআরবি ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ৮ ডিসেম্বর ২০২১  
জালিয়াতির অভিযোগে এনআরবি ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

প্রায় বছর খানেক আগে একজনের অনুরোধে ব্যাংকের হিসাব খোলার জন্য নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করেছিলেন। তারপর তিনি কোনো দিন ব্যাংকে যাননি, কোনো লেনদেনও করেননি।

পরে অন্য ব্যাংকে ক্রেডিট কার্ড করতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে দেখা যায় ওই হিসেবের বিপরীতে ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৯০ লাখ টাকা। হতবাক হয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় জালিয়াতির এ ঘটনা ঘটিয়েছে সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া শাখার এনআরবিসি ব্যাংক।

এই ঘটনায় ব্যাংকের গ্রাহক শেখ অহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ব্যাংক ম্যানেজার, পাঁচ কর্মকর্তাকে আসামি করে বুধবার (৮ ডিসেম্বর) খুলনার দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। থানা মামলা গ্রহণ করে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনায় পাঠিয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক নাজমুল হাসান মামলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

খুলনার দৌলতপুর থানায় দাখিল করা এজাহারে বলা হয়, বাদী রাজিব মটরস এর শেখ অহিদুল ইসলামের কাছে পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী রাব্বী এন্টারপ্রাইজের আব্দুল হালিম শেখ এনআরবি ব্যাংকে হিসাব খোলার জন্য ব্যাংকের ফরমে স্বাক্ষর নেন। কোনো টাকা জমা না দেওয়ায় তার আর বিষয়টি স্মরণে নেই। এ বছর তিনি খুলনার ব্র্যাক ব্যাংকে একটি ক্রেডিট কার্ড নেবার জন্য আবেদন করেন। এ সময় নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট দেখা যায়, তার সাতক্ষীরা কলারোয়ার এনআরবি শাখায় ৯০ লাখ টাকার টাইম লোন রয়েছে, যা গত ৬ সেপ্টেম্বর নেওয়া হয়েছে। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ৩ জানুয়ারি। এই হিসাবে ৯৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা লেনদেন করা হয়েছে। ব্যাংক থেকে চেক বই গ্রহণ, পে অর্ডার এমনকি ব্যাংকের সুদও পরিশোধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে এনআরবি ব্যাংক কলারোয়া শাখার ম্যানেজার কাজী মোশারেফ হোসেন, ম্যানেজার অপারেশন শাহেদ শরীফ, জুনিয়র অফিসার বদিউর রহমান ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম শেখসহ ৫ অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের নামে জাল জালিয়াতি করে ঋণ দেওয়া হয়।

এজাহারে বলা হয়, তার রিক‌্যুজিশন স্লিপ, কোনো আবদেন না করা এবং লেনদেনের কোনো এলার্ট ম্যাসেস মোবাইলে না আসায় তিনি এই মামলা দায়ের করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনার উপ-পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, এ অভিযোগটি প্রধান কার্যালয়ের অনুমতির পর তারা তদন্ত শুরু করবেন।

এ ব্যাপারে এনআরবি ব্যাংক কলারোয়া ব্যাংকের ম্যানেজার কাজী মোশারেফ হোসেন স্বীকার করে জানান, শেখ অহিদুল ইসলাম অভিযোগ করার পর এই টাকা সমন্বয় করে দেওয়া হয়েছে এবং গ্রাহকের কোনো অভিযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন। ব্যাংকে না গিয়ে কোনো আবেদন না করলেও ৯০ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে হলো ? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বারবার টাকা সমন্বয় করা হয়েছে বলে দাবি করে বলেন, ঠিকাদারি কাজের বিপরীতে এই ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

বাদী শেখ অহিদুল ইসলাম জানান, তিনি কোনদিন ব্যাংকে যাননি, হিসাব খোলা ফরম ছাড়া কোনো কাগজে তিনি সই করেননি, কোনো লেনদেন বা চেক বইয়ের জন্য আবেদন করেননি। সেখানে ৯০ লাখ টাকার ঋণ এটা বড় ধরনের জাল জালিয়াতির সঙ্গে ব্যাংকের বড় সিন্ডিকেট চক্র জড়িত। তিনি এই জাল জালিয়াতি চক্র আইনের আওতায় আনার জন্য মামলা দায়ের করেছেন।

খুলনা/নূরুজ্জামান/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়