ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মোবাইল খোয়া

আরিফুল ইসলাম সাব্বির, সাভার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১  
স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মোবাইল খোয়া

মহান বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মোবাইল ফোন হারিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ দর্শনার্থীরা। মূলত বিএনপি নেতাকর্মীদের আগমনকে ঘিরে হট্টগোলের সময় ফোন চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। জাতীয় স্মৃতিসৌধের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা। 

তবে সৌধ কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিজয় দিবসে লাখ লাখ লোক সমাগম হওয়ায় এ ধরনের অপরাধীদের তাৎক্ষণিক শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিসি ক্যামেরা দেখে অপরাধীদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বুধবার ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সৌধ এলাকা। এরপরই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ঢল নামে সৌধ প্রাঙ্গণে।

সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের আগমনের সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। হট্টগোল ও মারামারির ঘটনাও ঘটে ওই সময়ে। এক ব্যক্তিকে মোবাইল চুরির অভিযোগে কয়েকজনকে মারধর করতে দেখা যায়। এসময় ভিড়ের মধ্যে সময় টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মোজাফফর হোসাইন জয় ও রাশেদ বাপ্পীর দুটি মুঠোফোন পকেট থেকে চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পরপরই ঢাকা পোস্টের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আলকামা আজাদের মুঠোফোন চুরি যাওয়ার খবর মেলে। কিছুক্ষণ পর গণপূর্ত বিভাগ মিরপুর শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামের মুঠোফোন চুরি যাওয়ার কথা জানান গণমাধ্যমকর্মীদের। সাধারণ মানুষদের অনেকেই তাদের মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানান।

সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার মোজাফফর হোসাইন জয় বলেন, মহান বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান কাভারেজ করতে গিয়েছিলাম। হঠাৎ হট্টগোলের মাঝে পড়ে যাই আমরা। পরে পকেট থেকে আমার মুঠোফোন ও নগদ টাকা কে বা কারা বের করে নেয়। একই সময় আমার সহকর্মী রাশেদেরও মোবাইলটি তার পকেট থেকে চুরি হয়ে যায়। স্মৃতিসৌধের মতো পবিত্র স্থানে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিস চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা সত্যি দুঃখজনক! স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও সৌধ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তাদের কাছে অভিযোগ দিলেও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখেননি।

নিউজ টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক নাজমুল হুদা বলেন, আজ মোবাইলসহ নানা মূল্যবান জিনিসপত্র হারানোর অন্তত বিশটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক! স্মৃতিসৌধে হকার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা মানা হয়নি। যারা স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে আছেন তাদের এ বিষয়ে আরও সজাগ হওয়া প্রয়োজন।

গণপূর্ত বিভাগের মিরপুর শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম বলেন, বিজয় দিবসে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছিলাম। এসময় অনেক ভিড় ছিলো। হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে দেখি আমার মুঠোফোনটি নেই। স্মৃতিসৌধ এলাকায় এমন ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। নিরাপত্তায় নিয়োজিত কিছু পুলিশ চোখে পড়লেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।

গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, বিজয় দিবসের মূল আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে গত দুই দিন ধরেই আমরা রাতদিন জেগে কাজ করছি। কিন্তু আজ সৌধ এলাকায় লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। এর মাঝে অপরাধী কারা তাকে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে যদি স্পেসিফিক অভিযোগ পাই তাহলে সিসিটিভি দেখে আমরা পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

/এনএইচ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়