ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বিদেশে যাচ্ছে ছনের তৈরি শোখিন পণ‌্য 

শামীম কাদির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১২, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১   আপডেট: ১২:৩০, ১৯ ডিসেম্বর ২০২১
বিদেশে যাচ্ছে ছনের তৈরি শোখিন পণ‌্য 

ছন একসময় গ্রামে গঞ্জে অবহেলিত ছিল। তেমন কোনো কাজেই আসতো না। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে এই অবহেলিত উপাদান দিয়েও তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শোখিন পণ্য।

বাসা-বাড়ির সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়াও এসব পণ্য ব্যবহার করা যায় ঝুড়ি, ফুলের টবসহ নানান প্রয়োজনীয় কাজে। এসব পণ্যের চাহিদাও রয়েছে দেশে-বিদেশে। আর এ কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন অনেক নারী।

ছনের তৈরি নানা পণ্য তৈরি করে দেশ-বিদেশে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার ‘মা হ্যান্ডিক্রাফটস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। হেলকুন্ডা গ্রামের মাহবুব হোসেন তার ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ২০১৯ সালে গড়ে তোলেন প্রতিষ্ঠানটি। চাহিদা ভাল থাকায় ভাগ্য বদলাচ্ছে গ্রামের অসচ্ছল কয়েকশ নারীর।

সরেজমিনে সদর উপজেলার হেলকুন্ডা, পাইকপাড়া, বামনপুর, সগুনা, টুকুরমোড়, পারুলিয়া, হানাইল, পাঁচুর চক, মুজিবনগর, কেশবপুর, নতুনহাট, জলাটুল গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গ্রামেই একজন নারীকে সুপারভাইজার করে ১৫-২০ জনের টিম তৈরি করছেন নানান পণ্য। তাদের হাতে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ছনের ঝুড়ি, ফুলদানি, ফুলের টব। এসব পণ্য তৈরিতে গ্রামের অসচ্ছল নারীদের যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে তেমনি শৈল্পিক কাজে তাদের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে।

হেলকুন্ডা গ্রামের রোকসানা বেগম, টুকুর মোড় এলাকার অর্চনা রানী, কেশবপুর গ্রামের নাজমা আক্তার জানান, ‘মা হ্যান্ডিক্রাফটস’ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা বাড়ির কাজের ফাঁকে বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য তৈরি করেন।

এতে বাড়িতে বসেই অর্থ উপার্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। পরিবারকে অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারছেন। একটি পণ্য তৈরি করে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। বেশি পণ্য তৈরি করলে বেশি আয়।

উদ্যোক্তা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘এই কুটির শিল্পের মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য হলো সামাজিক উন্নয়ন। নারীরা যেন অর্থনৈতিকভাবে অর্থনীতিকে ভূমিকা রাখতে পারে। যদি ঋণ সহায়তা পেতাম তাহলে আরও ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারতাম।’

পুরানাপৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম সৈকত বলেন, ‘বেকার নারীরা ছন দিয়ে খুবই চমৎকার পণ্য তৈরি করছে। সরকারের কাছে সুদৃষ্টি আশা করছি যেন এ বিষয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করে।’

আরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জয়পুরহাট মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাবিনা সুলতানা। তিনি জানান, যারা কাজ করছেন খুবই ভালো আছেন। তারা তাদের স্বামীকে সহায়তা করছেন। তারা যেহেতু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন এটা তাদের জন্য খুব ভালো হচ্ছে।

জয়পুরহাটে ছনের তৈরি এসব পণ্য দেশ-বিদেশে যেমন কদর বাড়িয়েছে তেমনি অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন নারীরা।

জয়পুরহাট/বুলাকী

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়