নৌকা প্রতীকে ১ ভোট বাড়িয়ে ফলাফল সমান ঘোষণার অভিযোগ

চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে এক ভোট বাড়িয়ে দিয়ে ফলাফল সমান করার অভিযোগ উঠেছে। 

ওই ইউনিয়নের নির্বাচনে ৯টি ভোটকেন্দ্রে দেওয়া ফলাফল অনুযায়ী মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর চেয়ে এক ভোট কম পায় নৌকা প্রতীকের আওয়ামী লীগ প্রার্থী। পরে তৈয়ব খান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রের ফলাফল বিবরণী ঘষামাজা করে এক ভোট বাড়িয়ে ফলাফল সমান ঘোষণা করার অভিযোগ করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসেন।

এ ঘটনায় তিনি কেন্দ্রের ফলাফল অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে ফলাফল ঘোষণার জন্য রিটার্নিং অফিসার, প্রধান নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, গত ২৬ ডিসেম্বর রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোট গণনার পর ৯টি কেন্দ্রে দেওয়া ফলাফল অনুযায়ী তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ৫ হাজার ১৬৬ ভোট পান। 

তার নিকটতম প্রতীদ্বন্দী মো. তাইজুল ইসলাম নৌকা প্রতীক নিয়ে পান ৫ হাজার ১৬৫ ভোট। কিন্তু পরবর্তীতে রাতে উপজেলায় নির্বাচনী কন্ট্রোল রুম থেকে নির্বাচন অফিসার উভয় প্রার্থীই ৫ হাজার ১৬৬ ভোট পেয়েছেন বলে ঘোষণা করেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, ‘বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে দেওয়া রেজালশিটে মোটরসাইকেল প্রতীকে ৩১০ ভোট পায়। নৌকা প্রতীক পায় ১৭৫ ভোট। ফলাফল ঘোষণার পর তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ওই কেন্দ্রের রেজাল্টশিট নিয়ে দেখতে পাই সেখানে ঘষামাজা করে এক ভোট বাড়িয়ে নৌকা প্রতীকে ১৭৬ ভোট করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ করলে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা নানা রকম বর্ণনা দেন। এ অবস্থায় ভোট কেন্দ্রে দেওয়া রেজাল্টশিট অনুযায়ী ফলাফল ঘোষণার দাবি জানাই।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। জরুরি কাজে আমার অফিসে গিয়েছিলাম।’

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে নিযুক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নজরুল ইসলামের কাছে দুই ধরনের রেজাল্টশিট ও ঘষামাজার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এক ধরনের রেজাল্টশিট রয়েছে। ঘষামাজার বিষয়টি প্রিজাইডিং কর্মকর্তার ব্যাপার।’

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়ব খান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও রাজারহাট মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, ভোট গণনার সময় সেখানে দায়িত্বরতা জানিয়েছেন নৌকা প্রতীকে সীলমারা আরও একটি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের ভোট ১৭৫ থেকে ১৭৬ করা হয়েছে।’ 

আলাদা আলাদা দুটি রেজাল্টশিটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা নয়।’