ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

একটি সেতু ১০ হাজার মানুষের কান্না

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২১, ২ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ২১:০৯, ২ জানুয়ারি ২০২২

পানির ওপরে দেয়া হয়েছে প্লাস্টিকের ড্রাম। তার ওপরে কাঠের পাটাতন। এভাবে একটি খালের ওপর স্থানীয়রা তৈরি করেছেন ভাসমান সেতু। নড়বড়ে এ সেতু দিয়েই পার হচ্ছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। 

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা ও কুমিরমারা এলাকার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে পাখিমারা খাল। প্রায় ৫ বছর আগে এ খালের ওপর পুরাতন সেতুর মালামাল দিয়ে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় নতুন সেতু। ২০২০ সালের ৬ আগষ্ট রাতে হঠাৎ সেতুটি খালের মধ্যে ভেঙে পরে। পরে ওই বছরের অক্টোবর মাসে স্থানীয়রা চাঁদা তুলে ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে ১১৬ মিটার দৈর্ঘ্যের ভাসমান সেতু। সেতুটিতে মালামাল বহন তো দূরের কথা দুইজন মানুষ একসঙ্গে হেঁটে যাওয়া দায়।  

বর্তমানে এ ভাসমান সেতুটিও নড়বড়ে হয়ে গেছে। অনেক স্থান দিয়ে কাঠ ভেঙে গেছে। আবার অনেক স্থান দিয়ে ড্রাম ফুটো হয়ে পানি প্রবেশ করছে। বেশিরভাগ স্থানই দেবে গেছে। ফলে এ সেতু পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে শিক্ষার্থীসহ এলাকার সব বয়সী মানুষ ।  গর্ভবতী মায়েদের আনা নেওয়ার জন্য একমাত্র বাহন হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকা।  এছাড়া কৃষিপল্লী খ্যাত ওই ৫ গ্রামের কৃষি পণ্য বহন করতে হচ্ছে মাথায় করে। তাই এ ভোগান্তির অবসানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষরা। 

কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, আমরা ধান ও সবজি আবাদ করে থাকি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রির জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এই সেতুর অভাবে এসব পণ্য মাথায় করে নিয়ে যেতে হয়। যেটা অনেক কষ্টকর কাজ।  

কৃষক জাকির মিয়া বলেন, শুধু একটি সেতুর অভাবে আমাদের সবজিখাতে বছরে প্রচুর টাকা ক্ষতি হচ্ছে। বর্তমানে এই সেতু দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে অনেকেই আহত হচ্ছেন। ছেলে-মেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। 

কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মহর আলী বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পরই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তাদের নির্দেশে নতুন ব্রিজ নির্মাণের লক্ষে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দীর্ঘদিনেও কোন অগ্রগতি না হওয়ায় বর্তমানে আবার নতুন করে সাপোর্টিং ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবনা পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। 

ইমরান/সুমি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়