মুক্তিপণ না পেয়ে হত্যা: দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ড

রংপুরের পীরগাছায় শিশু রিয়া মনিকে (৭) হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তথ্য ও প্রমাণ না থাকায় মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন পাঁচজন।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-২-এর বিচারক মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পরান গ্রামের আবুল কালামের ছেলে রাসেল মিয়া (২২) এবং একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে সালাউদ্দিন তালুদ (২০)। রায় ঘোষনার সময়  রাসেল মিয়া আদালতে উপস্থিত থাকলেও সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন থেকে পলাতক।

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তায় প্রতিবশী শিশুদের সঙ্গে খেলছিল রিয়া। এ সময় তাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা রিয়ার বাবার কাছে মুঠোফোনে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় রিয়ার বাবা প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর তিনি ৬ জনের নাম উল্লেখ ও ৩ থেকে ৪ জনের নাম উল্লেখ না করে থানায় মামলা করেন।

মামলার সূত্র ধরে ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে রাসেলের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় মুক্তিপণ চাওয়ার জন্য ব্যবহৃত মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। এর ২৬ দিন পর জনৈক রাসেল তালুকদারের বাড়ি সংলগ্ন আব্দুল হক মিস্ত্রীর টয়লেট থেকে রিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সালাউদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, অর্থের লোভে রিয়াকে অপহরণ করে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর শ্বাসরোধে হত্যার করে তার লাশ টয়লেটে গুম করা হয়। তবে মামলার এজাহারে রাসেল মিয়া ও সালাউদ্দিনের নাম না থাকায় তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ জুন ওই দুজনসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান। দীর্ঘ ৭ বছরের বেশি সময় মামলার বিচারকাজ চলাকালে ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, বাদীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।