ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

৫০ বছর পর স্বীকৃতি, এলাকায় গণভোজ

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ১৩ জানুয়ারি ২০২২  
৫০ বছর পর স্বীকৃতি, এলাকায় গণভোজ

পেরিয়ে গেছে স্বাধীনতার ৫০ বছর। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়েও গেজেটভুক্ত হননি মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন মৃধা। পৃথিবী ছেড়েছেন তিনি একাত্তরে রণক্ষেত্রে। কিন্তু স্বীকৃতি পেতে হাল ছাড়েনি পরিবার। অবশেষে তাদের সেই আশা পূরণ হয়েছে।

২০২১ সালের সর্বশেষ গেজেটে সাধারণ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় গোলজার হোসেনের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। সেই আনন্দে এলাকার মানুষকে দাওয়াত দিয়ে খাইয়েছেন এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। তাদের এমন আয়োজন এলাকায় প্রশংসিত হয়েছে।

গত বুধবার কাশিয়ানী উপজেলার গোয়ালগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এই গণভোজের আয়োজন করা হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ প্রায় তিন হাজার মানুষ অংশ নেন।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা গোলজার হোসেন ১৯৫২ সালে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মাহমুদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম আব্দুল করিম মৃধা। তিনি ছাত্র থাকাবস্থায় স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ চলাকালে তিনি গোপালগঞ্জের উলিপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে তার নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি।  

মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, গোলজার আমার সহযোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধকালীন শত্রুসেনার আক্রমণে তিনি নিহত হন। সেদিন আরও দু’জন সহযোদ্ধা নিহত হয়েছিলেন। ৫০ বছর সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছি। আজ আনন্দ হচ্ছে এ কথা ভেবে- গোলজারের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেখে যেতে পারলাম।

শহীদ গোলজার হোসেনের ছোট ভাই মো. আব্দুস সালাম মৃধা অশ্রুসিক্ত চোখে বলেন, একাত্তরে ভাই হারিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও তাঁর নাম গেজেটভূক্ত করতে পারেনি। এবার হলো। ভাইয়ের এক বছরের মুক্তিযোদ্ধার ভাতার অর্থ দিয়ে তাঁর আত্মার শান্তির জন্য মানুষকে একবেলা খাইয়েছি।’

এ ধরনের আয়োজন এলাকার মানুষ আগে কখনও দেখেনি উল্লেখ করে মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাসুদ রানা বলেন, গোলজার হোসেনের ভাইয়েরা যা করলো, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। দেরিতে হলেও তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন- এটা আনন্দের, বলেছেন কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ রায়। সেই আনন্দ এলাকার মানুষের মনেও ছড়িয়ে পড়েছে।   
 

বাদল/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়