ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভাগনি জামাইয়ের হক বুঝিয়ে দিতে চেয়ারম্যানের জমি দখল  

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৬, ২১ জানুয়ারি ২০২২  
ভাগনি জামাইয়ের হক বুঝিয়ে দিতে চেয়ারম্যানের জমি দখল  

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ভাগনি জামাইয়ের হক বুঝিয়ে দিতে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে নব নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান সোহেলের বিরুদ্ধে। নির্বাচনে জিতে বিরোধী সমর্থকদের দমন করতেই তিনি কাজটি করেছেন বলে ভুক্তভোগীদের দাবি।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গীর  দুওসুও ইউনিয়নের সমির উদ্দিন কলেজের পাশের জমিতে গিয়ে দেখা যায় ৯ জন চৌকিদার পাহারায় বসিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ করাচ্ছেন সোহেল। এ সময় পাহারা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে দফাদার শরিফুল ইসলাম চেয়ারম্যানের আদেশপত্র দেখান। তিনি বলেন, গত চার দিন থেকে আমরা এই ভবন নির্মাণের কাজ দেখাশোনা করছি। ইউনিয়নের সব চৌকিদারকে এখানে থাকার আদেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। 

কেউ বাধা দিতে এলে চেয়ারম্যানের প্রতিহত করার নির্দেশনা দেওয়া আছে বলেও জানান তিনি। 

আদেশপত্রে খতিয়ান নম্বর ২৮৪, দাগ নম্বর ৮৭৮৮, জিমির পরিমান ১৩ শতকের মধ্যে ২ শতক জমিতে ঘর নির্মাণের কাজে ইউনিয়নের সব গ্রাম পুলিশকে আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের জন্যে বলা হয়েছে। যদিও সম্পূর্ণ ইউনিয়ন ফাঁকা করে ব্যক্তিগত কাজে  চৌকিদারদের ব্যবহার বেআইনি বলে মনে করেন দুওসুও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।

এদিকে কাগজপত্র দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করেছেন মজিবর রহমান। তিনি দুওসুও ইউনিয়নের সাবেক সদস্য। জমি দখলের বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন। রাইজিংবিডিকে মজিবর রহমান বলেন, আমি এবার ইউপি নির্বাচনে সোহেলের বিরোধীপ্রার্থী মোকলেসুরের নির্বাচন করেছিলাম। তখন থেকেই সে আমার উপরে ক্ষিপ্ত। নির্বাচনে জেতার পর আমাকে সে হুমকি দিয়েছিল। শপথ নেওয়ার পরপরই সে আমার জমি দখলে নিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। 

অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সোহেলের সঙ্গে। তিনি বলেন, জমি আমি নিজের জন্য দখল করছি না। আমার ভাগনি জামাই সৈয়দ আলী এই জমির মালিক। বিষয়টি নিয়ে মজিবরের সঙ্গে বসতে নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমার নোটিশ গ্রহণ করেনি। বরং সে বলেছে- আমাকে চেয়ারম্যান হিসেবে মানে না। তাই সৈয়দ আলীর হক বুঝিয়ে দিতে আমি তাকে জমি দখল করে দিচ্ছি।

এলাকা ফাঁকা করে চৌকিদারদের ব্যবহার করার বিষয়ে সোহেল বলেন, আমি মনে করেছি সেখানে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই চৌকিদার দিয়ে পাহারা বসিয়েছি। 

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জমির আরেক দাবিদার সৈয়দ আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিক আমি। কিন্তু মজিবর রহমান আমার জমিতে আমাকেই কাজ করতে দিচ্ছিল না। চেয়ারম্যান আমার আত্মীয়। আমি তার ইউনিয়নের একজন নাগরিক। তাই আমি তার কাছে সাহায্য চেয়েছি। 

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। তবে এ ধরনের কাজে চৌকিদারদের ব্যবহার করা বেআইনি।  
 

হিমেল/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়