ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কাপ্তাইয়ের জলেভাসা জমিতে বোরোর আবাদ শুরু

বিজয় ধর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৪:৫০, ২৩ জানুয়ারি ২০২২
কাপ্তাইয়ের জলেভাসা জমিতে বোরোর আবাদ শুরু

কাপ্তাই হ্রদের জলেভাসা জমিতে শুরু হয়েছে বোরো ধানের আবাদ। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকায় পাহাড়ি ঘোনায় ভেসে ওঠা জমিতে চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন পাহাড়ি চাষিরা। 

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলাতে প্রায় ৭ হাজার ৬শ ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ জলেভাসা জমি। এ পর্যন্ত ১৭৩০ হেক্টর জলেভাসা জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। 

এ বছর রাঙামাটিতে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জলেভাসা জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে সেচ সঙ্কট আর কৃষি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় জলেভাসা জমির চাষিরা এখন আর খরচ পোষাতে পারছে না।

স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের জলেভাসা জমিতে চারা রোপণ করা হবে। 

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কৃষকদের জন্য একটি প্রনোদনা কর্মসূচী রয়েছে এর মধ্যে জেলার প্রত্যেক কৃষককে ২ কেজি করে মোট ১০ হাজার কৃষককে হাইব্রিড বীজ ধান প্রদান করা হয়েছে। রাঙামাটির ১০ উপজেলায় ২ হাজার কৃষককে ৫ কেজি করে বোরো ও উফশী ধান বীজ ধান এবং ১০ কেজি ডিএপিও ১০ এমএপি সারও বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে জলেভাসা জমির কৃষকরাও পেয়েছেন।

এদিকে, রাঙামাটি সদর উপজলোর রাঙাপানি এলাকায় জলেভাসা জমির কৃষক বিলাস চাকমা বলেন, আমি নিজ উদ্যেগে এ চাষ করে থাকি। সরকার থেকে কোন আর্থিক প্রনোদনা পাইনা। সরকার যদি আমাদেরকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতো তাহলে আমার জন্যও ভালো হতো।

রাঙাপানি এলাকার আরেক চাষী নয়ন চাকমা বলেন, আগের তুলনায় আমাদের ধান চাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন জমিতে ধান চাষের জন্য একজন নারী শ্রমিককে ৩শ টাকা দিতে হয়। যা আগে দিতে হতো দেড়শ টাকা। একজন পুরষ শ্রমিক নিলে আগে দিতে হতো ৩শ টাকা বর্তমানে দিতে হচ্ছে ৬শ টাকা।এখন তেলের দাম, দিনমজুরি সবকিছুর দাম বৃদ্ধি। ধানচাষে লাভ কমে গেছে।

নারী কৃষক লতিকা চাকমা বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গেলে আমরা বোরো ধানের চাষ শুরু করি। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে জলেভাসা জমিতে ধান চাষ করে নিজেদের খাবারের চাল পেয়ে থাকি।

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাশয় কাপ্তাই হ্রদ ঘেরা রাঙামাটি জেলা। শীত মৌসুমে এ হ্রদের পানি কমতে থাকলে পাহাড়ি ঘোনায় ভেসে উঠে চাষাবাদযোগ্য জমি। পলি ভরাট এসব জমিতে লাঙ্গল চাষ ছাড়াই ধান রোপণ করেন পাহাড়ি চাষিরা। 

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার একটি বৈচিত্রতা হলো বোরো মৌসুমে কিছু জলেভাসা জমি আছে যেগুলোতে কৃষকরা  ধান চাষসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করে থাকেন। তবে জলেভাসা জমিটা পুরোপুরি নির্ভর করে কাপ্তাই হ্রদের পানির ওঠানামার উপর। 

তপন কুমার পাল বলেন, এছাড়াও এ বছর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে কাপ্তাই হ্রদের ৪০ জন কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

রাঙামাটি/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়