ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অবশেষে আশ্রয় পেলো ১১ দিনের শিশু 

ফরিদপুর সংবাদদাতা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ২৬ জানুয়ারি ২০২২   আপডেট: ১৭:২১, ২৬ জানুয়ারি ২০২২
অবশেষে আশ্রয় পেলো ১১ দিনের শিশু 

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নাম পরিচয় ও মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর নবজাতক শিশুটির ঠাঁই হলো এক দম্পতির ঘরে। 

মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের যাচাই বাছাই শেষে ১১ দিন বয়সী আহাম্মদ ইসলাম নামের ওই শিশুটিকে রফিকুল ইসলাম মুন্সি (৩৬) ও ফারজানা আক্তার রিপা (২২) দম্পতির হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দেওয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা কবির ত্রপা। ওই দম্পতি সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই মাস আগে বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের পদ্মা নদীর পাড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন তারা। তখন সে অসুস্থ ও অন্তঃসত্ত্বা ছিল। কয়েকদিন নদীর পাড়ে খড়ের গাদার ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে ওই গ্রামের বাসিন্দা শহীদ খানের ভাঙা পরিত্যক্ত একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়।

গত ১৪ জানুয়ারি ওই নারী (বয়স আনুমানিক ২৮) এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবজাতক ও তার মায়ের দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সুস্থতার কথা চিন্তা করে শিশু সন্তানটিকে ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুনের তত্ত্বাবধানে রেখে আসেন। পরে সন্তান দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম মুন্সি সন্তান জন্ম হওয়ার আগে থেকেই তাদের দেখভাল করায় সবার আবেদন যাচাই-বাছাই করে রফিকের স্ত্রী ফারজানা আক্তারের কোলে শিশুটিকে তুলে দেন ইউএনও।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজাদ খান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হক টিটু, সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ তালুকদার, উপজেলা সমবায় অফিসার মো. মিজানুর রহমান, স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা কবির ত্রপা বলেন, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই। আমি নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে এই মানসিক ভারসাম্যহীন অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছি। শিশু জন্ম নেওয়ার পরে অনেকেই দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেছিল। তাদের মধ্যে রফিকের কোনো সন্তান নেই, তাই তাকে দেওয়া হয়েছে। 

রফিকুল ইসলাম মুন্সি জানান, তাদের বিবাহিত জীবনের ৪ বছরেও তারা কোনো সন্তানের মুখ দেখেননি। এই নবজাতকে তাদের ঘরে তুলতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত। শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে তাদের আবেদন যাচাই বাছাই করে সংশ্লিষ্টরা শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেন। তারা ওই পাগলির দেখাশুনা করার পাশাপাশি নিজের সন্তানের মতো করে আহাম্মদ ইসলাম নামের শিশুকে লালন পালন করবেন।

উজ্জ্বল/মাহি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়