ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

আজ বসন্ত, রক্তিম সম্ভারে ভরে উঠেছে পলাশ 

রেজাউল করিম, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২   আপডেট: ০৮:২৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
আজ বসন্ত, রক্তিম সম্ভারে ভরে উঠেছে পলাশ 

বসন্তের প্রথম দিন আজ। ছবিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তোলা। ছবি: রেজাউল করিম

আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। বসন্তের মাতাল সমীরণের টকটকে লাল বর্ণচ্ছটায় মন রাঙানো পলাশ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। পত্রহীন গাছের নগ্ন ডালে প্রকৃতি তার আপন লীলায় মত্ত হয়ে উজ্জ্বল লাল বা গাড় কমলা রঙের পলাশ ফুটিয়ে মানুষের আদর ভালোবাসা বাড়িয়ে দিয়েছে । ফুলে ফলে সমৃদ্ধি বাংলার হাজার হাজার বৃক্ষরাজির মধ্যে পলাশ তাই অন্যতম।

আমাদের বাংলার প্রকৃতি, ভাষা, সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বড় স্থান দখল করে আছে বসন্ত। জীবন রসায়নে যেন কী এক পরিবর্তন আসে এই বসন্তে। হৃদয়ে সৃষ্টি হয় প্রণোদনা, নাড়া দেয় এক অব্যক্ত আবহ। কেবল মানব মানবীর মনেই নয় বৃক্ষরাজি, পক্ষী ও প্রাণিকূলেও বসন্তের হাওয়া দোলা দেয়। দখিনা হাওয়া, ঝরা পাতার শুকনো নূপুরের নিক্কন কিংবা কোকিলের কুহুতান। বাঙালির হৃদয়কে প্রেম-ভালোবাসার মধুরিমায় ছন্দায়িত করে তোলে মন।

বসন্তের প্রথম দিন আজ। ছবিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তোলা

বর্তমানে অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার পথে এই প্রকৃতি সমৃদ্ধ করা পলাশ গাছগুলো। আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যাচ্ছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলা এই চিরায়ত দৃশ্যপট। নতুন প্রজন্ম বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃতির অমিয় শোভা উপভোগ থেকে। এর মধ্যেও গাজীপুরের কয়েকটি স্থানে পলাশের হিরন্ময় উপস্থিতি রয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ডালপালা মেলে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। বিশালদেহী গাছটিতে ফুটেছে রাশি রাশি ফুল। ফুল ফুটে আছে সদরের মনিপুরের নামাপাড়া রাস্তায় পাশসহ কালিয়াকৈরে ও সদর উপজেলার বিভিন্ন পার্ক ও রিসোর্টে। বসন্তে গাছেগুলোতে নতুন ফুল এসেছে। দেখতে টকটকে লাল ছাড়াও হলুদ ও হালকা লালচে যেন চোখ সরানো দায়। পলাশ ফুল পাখির খুব পছন্দের, তাই হরেক পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দে মুখরিত হয়ে আছে।

বাংলা সাহিত্যেও পলাশের প্রভাব অতিশয়। অজস্র গানের কথায় কিংবা কবিদের কবিতার ছন্দে উঠে এসেছে বসন্তের এই স্মারক ফুলে। সুপ্রাচীন বাংলা সাহিত্যেও পলাশ বৃক্ষের ছিল সমান আদরণীয়। বসন্ত, ভালোবাসা আর পলাশ-শিমুল এ-যেন একই সুতোয় গাঁথা।

ছবিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তোলা

তাইতো এখনো আনন্দ আর বিরহ নিয়ে, তপন চৌধুরীর কণ্ঠে শুনি, পলাশ ফুটেছে শিমুল ফুটেছে/এসেছে দারুণ মাস/আমি জেনে গেছি/তুমি আসিবে না ফিরে/মিটিবে না পিয়াস। এজন্যই হয়তো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পলাশের রুপে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন “রাঙ্গা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে”।

/রেজাউল/এসবি/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়