ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কর্মবিরতি প্রত্যাহার, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু 

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ৭ মার্চ ২০২২   আপডেট: ১৮:২৪, ৭ মার্চ ২০২২
কর্মবিরতি প্রত্যাহার, বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু 

দুই দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (০৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুই দফা ফলপ্রসূ আলোচনার পর বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়ায় আমদানি-রফতানি শুরু হয়েছে। 

বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃক দুটি সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স বাতিল ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার (৬ মার্চ) সকাল থেকে আমদানি-রফতানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের পণ্য লোড-আনলোড। 

রোববার (৬ মার্চ) দফায় দফায় বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ফলপ্রসু আলোচনার পর তারা রাতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। 

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২ মার্চ) ভারত থেকে বন্ড লাইসেন্স (শুল্ক মুক্ত) এর মাধ্যমে আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের ট্রাকে করে আনা প্রায় অর্ধকোটি টাকার শাড়িসহ বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্য আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনর সঙ্গে ভারতীয় ড্রাইভারের সরাসরি সহযোগিতা থাকলেও ট্রাকসহ ড্রাইভারকে ছেড়ে দেয়া হয়। আমদানিকৃত ডেনিম ফেব্রিক্সের আমদানিকারক ঢাকাস্থ অনন্ত ডেনিম টেকনোলজি লিমিটেড ও ফ্যশান ফোরাম লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। 

এ ঘটনায় বুধবার বেনাপোলের শিমুল ট্রেডিং এজেন্সি ও আইডিএস গ্রুপ নামে দুটি সিএন্ডএফ লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করেন বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সিএন্ডএফের কর্মচারীদের নামেও মামলা করা হয় বেনাপোল পোর্ট থানায়।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আটক না করে সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিলের প্রতিবাদ ও কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতি যৌথ সভায় আমদানি-রফতানিসহ কাস্টমস ও বন্দরের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। লাইন্সেস পুনর্বহাল ও মামলা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

রোববার (৬ মার্চ) সকালে বেনাপোল কাস্টমস হাউজ মিলনায়তনে কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সার্বিক বিষয় নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। বৈঠকে যুগ্ম কমিশনার আব্দুল রশীদ মিয়া, উপ কমিশনার আহসানুল কবীরসহ কাস্টমসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে আরেক দফা ফলপ্রসূ আলোচনা শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা।   
 
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা সমস্যাগুলো অনুধাবণ করে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সোমবার সকাল থেকে আমদানি-রফতানিসহ বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম আগের ন্যায় চলছে বলে তিনি জানান।

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হওয়ায় বন্দর ব্যবহারকারীরা তাদের কর্মবিরতি তুলে নিয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন। দুইপক্ষ বসে সমস্যাগুলো সমাধান করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজের গতি বাড়ানোর জন্য কাস্টমসের সকল কর্মকতা, কর্মচারীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। 
 

রিটন/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়