ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

অভয়াশ্রমে ভাসছে মরা মাছ!

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ২৭ মার্চ ২০২২   আপডেট: ২২:৫২, ২৭ মার্চ ২০২২
অভয়াশ্রমে ভাসছে মরা মাছ!

ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তীরনয় নদীর দেশি মা মাছ সংরক্ষণের অভয়াশ্রমে ভেসে উঠছে মরা মাছ। দুই দিন ধরে মরা মাছের সংখ্যা বেড়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ গভীর রাতে পানিতে বিষ মিশিয়ে মাছ চুরি করেছে একটি চক্র। তবে মাছ মরার কারণ বলতে পারছে না স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তা।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য অফিস বলছে, মাছগুলো অনেক গন্ধ ছড়িয়েছে। মাছ মরার কারণ এখনও জানা যায়নি। কোনো মাছও সংগ্রহ করা হয়নি। কারণ পরীক্ষা করার যন্ত্র ঠাকুরগাঁওয়ে নেই।

রোববার (২৭ মার্চ) সকালে তীরনয় নদীর কবিরাজ পাড়া ঘাটে বহু মরা মাছ ভাসতে দেখা যায়। প্রতি মৌসুমে আশপাশের প্রায় ৩০০ পরিবার সেখানে মাছ শিকার করে সংসার চালায়।

স্থানীয় জেলে আবুল হোসেন মনে করছেন, একটি চক্র রাতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার করছে। মরা মাছ সংগ্রহ শেষে চলে যাওয়ার পরে যে সব মাছ থেকে যায়, সেগুলো ভেসে উঠছে।

আবুল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার (২৫ মার্চ) ভোরে এসে দেখি নদীতে কিছু মরা মাছ ভাসছে। আমার সন্দেহ হয়। আমি বাসা থেকে জাল এনে যাচাই করে দেখি অভয়াশ্রমে ভিতরে জালে মাছ ধরা পড়ছে না। আমার আর বোঝার বাকি থাকেনি। এবার সংসার চালাতে খুব কষ্ট হবে আমাদের।’  

স্থানীয় জেলে হাসান বাদশা বলেন, ‘আমরা গরিব। নদীর ধারে থাকি৷ বর্ষা এলে মাছই আমাদের সব। তাই আইন মেনে মৌসুম ছাড়া মা মাছ ধরি না। কিন্তু এখানে যে বিষ দিয়ে মাছ চুরি করছে কিছু মানুষ।’ 

বাদশা বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন তরল বিষসহ গ্যাস টেবলেট দিয়ে পুরো পানি বিষাক্ত করে মাছ ধরেছে রাতে। আমি নিজে সেই দৃশ্য দেখেছি। এরা যেন পার না পায়। আমরা মূর্খ মানুষ। কর্মকর্তারা এটার ব্যবস্থা না নিলে এবার অনটনের সময় না খেয়ে মারা যাবো। আমাদের উপর অবিচার ও অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা তদন্ত চাই। মাছ পরীক্ষা করা হোক। ঘটনাটি জানাজানি হলে আমার স্ত্রী ঘটনার দিন ৯৯৯ এ কল করেছিল। তবে কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করিনি।’ 

নদীর ধারে উপস্থিত অভিযুক্ত সোহেল ও সফিকুল বলেন, ‘আমরা জাল দিয়ে মাছ ধরেছি। কোনো বিষ দেয়া হয়নি।’ তবে মাছ মরে ভেসে আছে কেন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন তারা দুইজনে।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল আনাম ডন বলেন, ‘ঘটনার কিছু জানি না। কোনো অভিযোগও পাইনি। ডিউটি অফিসারও জানে না। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ 

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, ‘গত বছর অক্টোবরে তীরনই নদীতে বিভিন্ন জাতের ১০০ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে দেশি মা মাছ সংরক্ষণের জন্য অভয়াশ্রম তৈরি করা হয়। আমি আজ বিকেলে জানতে পেরে ঘটনা স্থানে যাই। সেখানে দেখতে পাই কিছু মরা মাছ ভাসছে। তবে বিষ প্রয়োগে মরেছে কি না তা যানা যায়নি।’ 

তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

হিমেল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়