ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তিন মাসের নির্মাণকাজ দেড় বছরেও শেষ হয়নি

রংপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৪, ১১ এপ্রিল ২০২২  
তিন মাসের নির্মাণকাজ দেড় বছরেও শেষ হয়নি

রংপুরের বালাপাড়া ইউনিয়নের তপিকল হাট থেকে গোপীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে ব্রেন্টের বাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন একটি রাস্তার কাজ দেড় বছরেও শেষ হয়নি। ০.২ দশমিক ৭৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটির নির্মাণকাজ ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ওই বছরের ৪ এপ্রিল নির্মাণকাজ শেষ করার কথা।

রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। তাদের অভিযোগ, প্রায় ছয় মাস ধরে অজানা কারণে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে আছে। আবার নির্মাণাধীন এই রাস্তার রক্ষাকবচ হিসেবে নবনির্মিত প্রায় চার শ’ মিটার গাইড ওয়াল ধসে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খালে। যা নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। 

সোমবার (১১ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, তপিকল হাট প্রধান সড়ক হতে রাস্তাটির প্রবেশপথে সবে মাত্র মাটি খুঁড়ে দুই ধারে উঁচু করে রাখা হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে মাটি নরম হওয়ায় পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। যা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাওয়াও দুষ্কর।

উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, অবকাঠামোগত দক্ষতা ও তথ্যের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সহনশীলতা বৃদ্ধি প্রকল্পের (প্রভাতী) আওতায় ২০২০-২১ অর্থবছরের ১৮৫৪২৪০৬০ নং আইডির রাস্তাটির প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৩৯ লাখ ৬১ হাজার ১৫৭ টাকা। কিন্তু ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশ লেসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সিনথিয়া-ঐশী অ্যান্ড জেসমিন’ চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের ৪ এপ্রিলের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও রাস্তার সীমানায় গাছ থাকায় তা শেষ করা যায়নি।

রাস্তাটির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলীর সাথে। তিনি জানান, দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এই রাস্তার নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে পানি জমে রাস্তাটিতে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি ইউনুস আলী আক্ষেপের সুরে বলেন, এ রাস্তা দিয়ে অসুস্থ রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া যায় না। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ চরাঞ্চলের হাজারো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, অথচ দেখার কেউ নেই। 

অটোচালক আসিক জানান, রাস্তার এই দুরবস্থার কারণে অনেক দূর ঘুরে তাদের চলাচল করতে হয়। কারণ নরম মাটি আর খানাখন্দের জন্যে প্রায় প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে।

উপজেলা প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জেমি জানান, রাস্তার সীমানায় কিছু গাছ থাকায় এবং বন বিভাগের গাছ কাটার টেন্ডার না হওয়ায় এমন দেরি হচ্ছে। আর গাইড ওয়াল ধসে পড়ার কারণ হিসেবে রাস্তা ঘেঁষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল খননকে দায়ী করেন এ কর্মকর্তা। 

অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে খাল খনন করেছি। তারা যদি রাস্তার সীমানা চিহ্নিত না করে ভরাট খালে গাইড ওয়াল দেয়, তাহলে তো এমনটা ঘটবেই।

রাস্তার গাছ কাটা বিষয়ে উপজেলা বন কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, বন বিভাগের গাছ না কাটার কারণে রাস্তা নির্মাণ বন্ধ আছে এমন কথা জানা নেই তার। তবে উল্লেখিত রাস্তায় বন বিভাগের ৩৮টি গাছ কাটার অনুমোদন হয়েছে এবং রেজুলেশন আছে স্বীকার করেন তিনি।

আমিরুল ইসলাম/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়