ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে নেই ঈদের আনন্দ 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৯, ১ মে ২০২২   আপডেট: ১৪:৩০, ১ মে ২০২২
গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে নেই ঈদের আনন্দ 

ঈদুল ফিতরের আনন্দ নেই গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে। আয় রোজগার নেই। কষ্টে গোটা রমজান পার করলেও ঈদে বিপাকে পড়েছেন তারা। নতুন কাপড় ও ভালো খাবার যোগাড় করা তো দূরের কথা, ভাতের ব্যবস্থা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনের মতো ঈদের দিন কাটাতে হবে তাদের।

গাইবান্ধা শহর থেকে পূর্ব উত্তর ও দক্ষিণে তিন নদী তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র। এসব নদ-নদীর ১’শ ৬৫ চরাঞ্চলে অন্তত ৩ লাখেরও বেশি মানুষ বাস করেন। তাদের বিভিন্ন দুর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাস করতে হয়। অধিকাংশ লোকের নিজের কোনো জমি নেই। অন্যের জমিতে কাজ করেন। এলাকায় এখনো ধান কাটার পুরো মৌসুম শুরু না হওয়ায় পরিবারের পুরুষরা দূরের জেলায় গিয়ে কামলার কাজ করেন। যা আয় হয় তা দিয়ে ছেলের মেয়ের খাবার যোগাড় করেন তারা।

গাইবান্ধা থেকে সোজা উত্তর-পূর্বে একটি চরের নাম কাপাসিয়া। পায়ে হেঁটে ও নৌকায় করে যেতে হয়। তারপরের গ্রামের নাম লালচামার। এই চর থেকে অনেকেই দূরে যায় ধান কাটতে। ধান কাটার কাজ শেষ করে ঈদের আগে ঘরে ফেরার কথা। কিন্তু এখনো অনেকেই ফিরে আসেননি। ময়না বেগম অপেক্ষায় আছেন তার স্বামী ময়নুল মিয়া কবে আসবে! তিন ছেলে মেয়ের জন্য এখনো কিছু কিনতে পারেননি। তবে স্বামী ময়নুল মিয়া ফোন করে বলেছেন, তিনি আসার সময় ময়নার জন্য শাড়ি আনবেন। আর গাইবান্ধা থেকে সন্তানদের জন্য যা লাগে কিনবেন। 

আইনুল হক বলেন, এবার অনেকেই ইট ভাটা, ধান কাটার কাজে বাইরে গেলেও ফিরতে পারেননি। কেউ টাকাও পাঠাতে পারেননি পরিবারের জন্য। ধার দেনা করে সেমাই, চিনি কিনতে পারলেও মাংস-ভাত ও নতুন কাপড় তাদের কপালে নেই। অন্যান্য দিনের মতো তাদের ঈদের দিনটাও কাটবে।

সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি, গজারিয়া, উড়িয়া, কঞ্চিপাড়া ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর, এ্যাড়েন্ডাবাড়িসহ অন্তত ১৬টি ইউনিয়নের দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের অবস্থা খুব খারাপ। তারাও কামলা দেন অন্যের জমিতে। দল বেঁধে কাজে গেছেন অনেকেই। ফিরবেন চাঁদ রাতে। আসার সময় হয়তো সেমাই চিনি নিয়ে আসবেন এই ভরসায় আছেন চায়না বেগম।  

গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান বলেন, ‘সরকারিভাবে যা আসে তা দিয়ে সকলের চাহিদা মেটানো যায় না। এজন্য আমাদের বদনাম হয়।’
ঘাগোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু বলেন, ‘চরাঞ্চলের বিষয়টি আলাদা। এখানে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেশি। ফলে দিন মজুরি করতে ওইসব গ্রামের পুরুষরা অধিকাংশ সময়ে চরের বাইরে কাজ করতে যান। তাদের কাছে ঈদ মানে বিশেষ কোনো দিন নয়।’ 

সিদ্দিক আলম দয়াল/সুমি 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়