‘দুষ্কৃতকারীদের’ পিটিয়ে মারার নির্দেশ নোয়াখালীর এমপি’র

দুষ্কৃতকারীদের গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনের সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম।

শুক্রবার (৬ মে) সন্ধ‌্যায় সোনাইমুড়ীর দেওটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

এমপি ইব্রাহিম বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীদের যেখানেই পাবেন, গণপিটুনি দিয়ে জায়গায় মেরে ফেলবেন। কেউ মামলা করলে সেটা আমি বুঝব। প্রয়োজনে আমি হুকুমের আসামি হব। আপনাদের কিছুই হবে না।’

স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় এমপির নিজ দলীয় শক্ত প্রতিপক্ষ থাকায় তিনি নিজের অনুসারীদের উৎসাহ দিয়ে চাঙ্গা রাখতে এমন অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন। তবে এতে যে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে বা অতি উৎসাহী হয়ে সাধারণ জনগণও হামলার শিকার হতে পারে সে বিষয়ে তিনি না ভেবেই এসব কথা বলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, এমপি সাহেব প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে গিয়ে এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যক্তিগত রেষারেষি এখন হানাহানির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। 

এদিকে এমপি এইচ এম ইব্রাহিমের ওই বক্তব‌্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ‌্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। তার ওই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করছেন অনেকেই।

কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, ‘নোয়খালী-১ আসনের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কি এতই খারাপ যে পিটিয়ে মেরে ফেলতে জনগণকে নির্দেশ দিতে হবে?’ 

অনুষ্ঠানে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মী ও এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

ওসি মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি সেখানে উপস্থিত থাকলেও এমপির দেওয়া এমন বক্তব্য খেয়াল করিনি।’ তবে এমপির দেওয়া বক্তব‌্যের ভিডিওটি তাকে দেখানোর পর তিনি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে এমপি এইচএম ইব্রাহিম বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে গিয়ে কিছুটা বেশি বলা হয়ে গেছে। এমপি হিসেবে এটা আমার বলা উচিত হয়নি। আইন হাতে তুলে নেওয়ার জন্য কাউকে নির্দেশ দিতে আমি পারি না। পরে মনে হয়েছে বক্তব্যটা অতিরঞ্জিত হয়ে গেছে।’