ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অপেক্ষায় দিন যায় তাদের

অমরেশ দত্ত জয়, চাঁদপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৫, ৮ মে ২০২২   আপডেট: ১১:২৭, ৮ মে ২০২২
অপেক্ষায় দিন যায় তাদের

ঈদে ভ্রমণপিপাসুদের নৌযাত্রায় কিছুটা উপভোগ্য মুহূর্ত দিতে অপেক্ষায় থাকেন চাঁদপুরের বড়স্টেশন মোলহেডের বঙ্গবন্ধু পার্ক এলাকার মাঝিরা। তারা পদ্মা-মেঘনার মিলন স্থানের পাশ ঘেঁষা ডাকাতিয়া নদীর তীরে নৌকার ওপর যাত্রীদের অপেক্ষায় বসে থাকেন। দুই বছরের করোনার ধকল কাটিয়ে উঠে এবার ঈদে বেশি ভ্রমণপিপাসুদের নৌ ভ্রমণের আশা করলেও টানা দু’দিনের বৃষ্টিপাত ও বৈরী আবহাওয়ায় তাদের সেই আশায় যেন গুড়েবালি।

৭ মে দুপুরে ঈদের পঞ্চম দিনে তীব্র গরমে মাঝিদের যাত্রী না পাওয়ার হতাশা নিয়ে নিজের নৌকার ওপর ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। 

সরজমিনে দেখা যায়, যাত্রী পারাপারে ভালো মন্দ দেখভালের জন্য এখানকার মাঝিরা নিজ উদ্যোগেই একটি সমিতি করেছেন। সেই সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের দিক-নির্দেশনাতেই তারা চলাচলের নিয়মনীতি তৈরি করছেন। নির্দিষ্ট শিডিউল করে তারা মানুষকে নৌ ভ্রমণে আনন্দ দেন। তাদের সমিতির নাম হচ্ছে দেওয়ানঘাট বড়স্টেশন ডিঙি মাঝি সমবায় সমিতি।

ভ্রমণপিপাসু হোসেন মুন্সী, মারুফ, শাহিন মাঝি, কাউন্সিলর শফিকুল ইসলামসহ আরও অনেকে বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম স্থান এই ত্রিনদী মোহনা এরিয়ার বড়স্টেশনের বঙ্গবন্ধু পার্ক। এখানে বিনোদনে ভিন্ন মাত্রা দিতে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মাঝি ভাইয়েরা বসে থাকেন। তাদের সুবাদেই একসাথে ডাকাতিয়া, পদ্মা ও মেঘনা নদীর মিলনস্থলের ত্রিমোহনা সরাসরি নৌকা করে উপভোগ করা যায়। তারা যে বেকার জীবন না কাটিয়ে নদী পাড়ে এভাবে মাঝি হয়ে আয় রোজগারের সাহসী জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন, সেজন্য তাদের প্রতি জানাচ্ছি শ্রদ্ধা। তারা ভালো থাকুক এই প্রার্থনাই করছি।

নৌ ভ্রমণ নিয়ে কথা হলে এই দেওয়ানঘাট বড়স্টেশন ডিঙি মাঝি সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল বেপারী ও দপ্তর সম্পাদক রফিক বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু নৌকার মাঝি আছেন, যারা শুধু রিজার্ভ নিয়ে যাত্রী পারাপার করেন। আবার কিছু নৌকার মাঝি রয়েছেন, যারা শুধু মালামাল পরিবহন করেন। বেশিরভাগ মাঝি পাঁচ টাকা করে ৬ থেকে ৮ জন লোক নদী পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঈদ ও বিশেষ দিবসে আমাদের আয় রোজগার একটু বেশি হয়। তাই এ সময়ে আমরা চুক্তিতে আধা ঘণ্টা বা ১/২ ঘণ্টাও নদীতে লোকদের ভ্রমণ করিয়ে আনন্দ দিয়ে থাকি।

এবিষয়ে দেওয়ানঘাট বড়স্টেশন ডিঙি মাঝি সমবায় সমিতির সভাপতি সেলিম মোল্লা বলেন, আমরা নৌ ভ্রমণে যাত্রীসহ সবাই লাইফ জ্যাকেট পরিধান করি। রৌদ্র বাড়লে ভ্রমণ পিপাসু লোক বেশি পাওয়া যায়। আবার বৃষ্টি বা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া হলে ভ্রমণ পিপাসু লোক কম পাওয়া যায়। বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা বংশ পরম্পরায় এ পেশায় জড়িত হওয়ায় আর্থিক অভাব অনটন থাকলেও অন্য পেশায় যেতে পারি না। চেষ্টা করি সততা নিয়ে এ পেশার উপার্জন দিয়ে সংসার পরিচালনা করতে। মানুষকে নদী ভ্রমণ করিয়ে মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই আমরা মাঝিরা শান্তি পাই।

/এইচএম/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়