ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পাবনায় আকস্মিক হাসপাতালে এমপি, নানা অনিয়মে ক্ষোভ

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০১, ১৫ মে ২০২২  
পাবনায় আকস্মিক হাসপাতালে এমপি, নানা অনিয়মে ক্ষোভ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার ওসিকে হাসপাতালে তলব করে দ্রুত সব অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। 

রোববার (১৫ মে) সকাল ১১টায় নুরুজ্জামান বিশ্বাস হাসপাতালে উপস্থিত হওয়ার খবর পেয়ে কিছুক্ষণ পরেই সেখানে আসেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নায়েব আলী বিশ্বাস ও পৌর মেয়র ইসাহাক আলী মালিথা। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসমা খানের কার্যালয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বৈঠক বসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস। 

এ সময় হাসপাতালের জঞ্জাল ও অনিয়ম দূর করার নির্দেশ দিয়ে সংসদ সদস্য বলেন, হাসপাতাল কম্পাউন্ডে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকতে পারবে না। ফুসকা, চটপটি ও বাদামের দোকান অপসারণ করতে হবে। ওষুধ কোম্পানির দুই শতাধিক প্রতিনিধির কারণে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে, তাই প্রতিনিধিরা সপ্তাহে দুইদিন আউটডোরে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ভিজিট করবেন, জরুরি বিভাগে বা ওয়ার্ডে প্রবেশ করতে পারবেন না। কোনো অবস্থায় রোগীদের হয়রানি করা যাবে না। 

সন্ধ্যার পরে মাদকাসক্তদের প্রবেশাধিকার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে জানিয়ে সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বলেন, হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাম, ডিজিটাল এক্সরে এবং ইসিজি মেশিন চালু রাখার ব্যবস্থা এবং হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারিসহ সকল ডেলিভারির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ঈশ্বরদী হাসপাতালে সকল ডেলিভারির ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও একশ্রেণির ডাক্তার, নার্স ও দালালরা রোগী ও অভিভাবকদের ক্লিনিকে ভর্তির জন্য উদ্বুদ্ধ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে, এটা বন্ধ করতে হবে। 

এ সব নির্দেশনা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে এগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেখভালের জন্য নির্দেশ দেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাস, পৌর মেয়র ইসাহাক আলী মালিথা, ইউএনও পিএম ইমরুল কায়েস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিআই তাহসিন কবীর, হাসপাতালের আরএমও ডা. শফিকুল ইসলাম শামীম, থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ, কৃষকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মুরাদ মালিথা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, এমপি মহোদয় যে সমস্যার কথা বলেছেন, সেগুলো দ্রুত সমাধান করা হবে। এ জন্য তিনি ইউএনও, থানার ওসির পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেন।

পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অবহেলা, দায়িত্বহীনতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সব অনিয়ম যেন আর না হয়, সেজন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে হাসপাতালের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ শুনে আসছি। তাই আজ হঠাৎ করেই হাসপাতালে গিয়ে নিজ চোখে এ সব অনিয়ম দেখে কর্তৃপক্ষকে সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

এখন থেকে সাধারণ মানুষ হাসপাতাল থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 
 

শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়