কালনী-কুশিয়ারা নদীতে ব্যাপক ভাঙন
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বর্ষার শুরুতেই ভাঙন দেখা দিয়েছে কালনী-কুশিয়ারা নদীতে
হাওড়বেষ্টিত হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত কালনী-কুশিয়ারা নদীতে প্রতি বছর ভাঙনের কারণে নিঃস্ব হচ্ছে শত শত মানুষ। এবারও বর্ষার শুরুতেই নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়িসহ নানা ধরণের স্থাপনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কালনী-কুশিয়ারা নদীর ভাঙন প্রতিদিন দুই থেকে তিন ফুট করে বাড়ছে। ইতোমধ্যে ৩০ থেকে ৪০টি বাড়ি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা চলতি বছর বর্ষায় এই ভাঙন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। বাড়িঘরসহ ভূ-সম্পত্তি হারাবে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, বিগত তিন বছরে উপজেলার কাকাইলছেওয়ের বদলপুর, মনিপুর, বাহাদুরপুর গ্রামগুলো তীব্র ভাঙনে শত শত ঘরবাড়িসহ নানা ধরণের স্থাপনা বিলীন হয়েছে।
কালনী-কুশিয়ারা নদীর দুই কিলোমিটার এলাকা বদলপুর থেকে মণিপুর পর্যন্ত পরিদর্শনকালে কথা হয় ভাঙনকবলিত মানুষের সঙ্গে। তারা জানান,উপজেলার কাকাইলছেওয়ের বদলপুর, বাহাদুরপুর, মনিপুরে নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ১০০ ঘরবাড়ি। এদের অনেকেই ঘরবাড়ি নিরাপদে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ায় জনশূণ্য হয়ে পড়েছে নদী-তীরবর্তী এলাকা। এসব মানুষ ঘরবাড়ি ও গবাদি পশু নিয়ে এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
নদীপাড়ের বাসিন্দা বাদশা মিয়া বলেন, নদী জাহের আলীর ভিটেমাটি কেড়ে নিয়েছে নদী। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় বাধ্য হয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তাকে চলে যেতে হয়েছে ঢাকায়।
মনিপুর গ্রামের নুর জাহান বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুরের কাজ করেন মানুষের কৃষি জমিতে। এখানে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এর মাঝে নদী যেভাবে বাড়িঘর নিয়ে যাচ্ছে, আমরা কোথায় গিয়ে উঠবো ভাবতে পারছি না।
বাহাদুরপুর গ্রামের ঝর্ণা আক্তার বলেন, সরকার যদি একটু উদ্যোগ নেয়, তাহলে আমরা সন্তানদের নিয়ে এখানে থাকতে পারবো। এ জমি ছাড়া আমাদের আর থাকার জায়গা নেই।
একই গ্রামের মঙ্গল সূত্রধর বলেন, বস্তা ফেলে দ্রুত নদীর ভাঙন ফিরাতে হবে। না হলে অন্যত্র গিয়ে বসতি গড়তে হবে।
কাকাইলছেও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ৮ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হলে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করা হবে।’
মামুন/ মাসুদ
আরো পড়ুন