ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সন্তানদের নিয়ে ৩ দিন অভুক্ত মমতা

আল আমিন, সুনামগঞ্জ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২১ মে ২০২২   আপডেট: ১৬:০৯, ২১ মে ২০২২
সন্তানদের নিয়ে ৩ দিন অভুক্ত মমতা

মমতা বেগম

বন্যার পানি ঘরে। নেই চুলা জ্বালানোর উপায়। কাজ না থাকায় সন্তানদের নিয়ে তিন দিন ধরে না খেয়ে আছেন সুনামগঞ্জের মমতা বেগম।  

মমতা বেগম সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের রশুলপুর গ্রামের মৃত আফছার উদ্দিনের স্ত্রী।

শনিবার (২১ মে) সকালে মমতা বেগম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘স্বামী মারা গেছে অনেক দিন হলো। বড় ছেলে বিয়ে করে বউকে নিয়ে চলে গেছে শ্বশুর বাড়ি। মানুষের কাজ করে দুই সন্তান নিয়ে খাই। বন্যা প্রথমে হাওরের ধান নিছে। এখন ঘর-বাড়িতে পানি। বন্যা আসার পর থেকে কষ্টে আছি।  তিন দিন ধরে না খেয়ে আছি।’

মমতার মেয়ে মাহবুবা বেগম বলেন, ‘বাবা ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পর মা পরের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে আমাদের সংসার চালাচ্ছেন। বন্যার কারণে আমরা বেশি বিপদে পড়েছে। চারিদিকে পানি। পানির কারণে মা কাজে যেতে পারছেন না। তাই ঘরে খাবারও নেই।’ 

এ বিষয়ে গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সৌকত আলী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমার ইউনিয়নে এখনও সরকারি ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয়নি। আমরা ব্যক্তিগতভাবে বন্যা কবলিত মানুষদেরকে সহযোগিতা করছি। মমতা বেগমকেও আমরা দ্রুত সহযোগিতা করবো। উনি না খেয়ে আছেন তিন দিন ধরে এটা স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারকে জানালে হয়তো আরও আগে সহযোগিতা করতে পারতাম।’ 

পাশের গ্রাম ইনাতনগর। এই গ্রামের বিনা বেগম বলেন, বন্যার পানি ঘরে-দুয়ারে। রান্না বান্না করিতে পারছি না। ঘরের ভেতর পানি। বাথরুমে পানি। টিউবওয়েলেও পানি। খাওয়ার পানি পাচ্ছি না। কিন্তু আমাদেরকে কেউ দেখে না। সুনামগঞ্জে দেখলাম ত্রাণ দেয় কিন্তু গ্রামেগঞ্জে কেউ দেয় না। শুধু শহর ও আশপাশের লোকজন পায়।

মরিয়ম বেগম, রুজিনাসহ একাধিক নারীরা জানান, বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছায়নি। নাম মাত্র কিছু লোক পাচ্ছে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জেলার বন্যা পরিস্থিতিটা কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে সদর উপজেলায় পানি বাড়ছে। আমরা বন্যা কবলিত মানুষদের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছি। ঘরবন্দি মানুষদেরকে শুকনো খাবার, নগদ টাকা, জিআর চাল বিতরণ করছি। বিষয়টি খোঁজখবর নিচ্ছি। 

ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে তিনি জানান।

আল আমিন/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়