ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ক’জন সাদা পোশাকের পুলিশ ও একজন ব্যবসায়ীর মানসম্মান

রফিক সরকার, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ২৬ মে ২০২২   আপডেট: ০৯:৫০, ২৬ মে ২০২২
ক’জন সাদা পোশাকের পুলিশ ও একজন ব্যবসায়ীর মানসম্মান

কোনো অপরাধ না করেও ভুয়া ওয়ারেন্টে ৭ দিন কারাবাস করেছেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার এক ব্যবসায়ী। বিষয়টি আদালতের নজরে আসলে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী তাকে মুক্তির নির্দেশ দেন।

গত ১৯ মে কারাগার থেকে মুক্তিপান তিনি। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সকালে ওই ব্যবসায়ী স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

অহেতুক কারাবাসকৃত ব্যবসায়ী নাম মো. নাজমুল শেখ। তিনি গাজীপুর কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের সালদিয়া হাফিজ উদ্দিন শেখের ছেলে।

নাজমুল শেখ বলেন, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর এলাকার তার গোল্ডেন হারভেস্ট আইসক্রিম লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ১২ মে রাত ১০ টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে তিন ব্যক্তি তাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে কালীগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। থানায় নেওয়ার পর পুলিশ তাকে জানায় তার নামের গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট আছে। তিনি ওয়ারেন্টের কপি দেখতে চাইলে তখন মুঠো ফোনের ডিসপ্লেতে তার নামের একটি ওয়ারেন্ট দেখায়। তিনি পুলিশকে জানান, আমি এমন কিছু করিনি যে আমার নামে ওয়ারেন্ট হতে পারে। আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে। ভালো করে যাচাই করে দেখেন। তারা কোনো সহযোগিতা না করে উল্টো তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।

তিনি আরো বলেন, দুইদিন গাজীপুর জেল হাজতে থাকার পর ১৪ মে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গাজীপুর জেলা হাজত থেকে হাতকড়া এবং ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে ঢাকায় নিয়ে যায়। যাওয়ার ট্রেনে মানুষের কতো রকমের কটুক্তি শুনতে হয়েছে। তখন মনে হয়েছে কোনো অপরাধ না করেই জেলে যাওয়ার চেয়ে মরে যাওয়াও ভালো ছিলো। ট্রেন থেকে নামিয়ে রিকশা, পরে বাসে নিয়ে কেরানীগঞ্জ কারাগারে পাঠায়। এ সময়ে আমার আত্মীয় স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে নিশ্চিত হয় এমন কোনে মামলা কোনো থানায় হয়নি। পরবর্তীতে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট নং-১ ঢাকা মহানগর সিআর ১৭৮০/১৫ নং মামলার কোন অস্তিত্ব খুঁজে না পেয়ে তাকে বেকসুর খালাস দেন। সাত দিন পর ১৯ মে তিনি কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন।

ব্যবসায়ী নাজমুল শেখ বলেন, এই ভুয়া ওয়ারেন্ট তৈরি ও আমাকে সমাজে হেয় করার জন্য স্থানীয় কিছু ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা করে আসছে। ধারণা করছি তারাই ওই প্রতারণা করে আমাকে জেলে পাঠিয়েছে। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও জানান। এছাড়া তিনি বিনা দোষে জেল খাটায় ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। 

তার আইনজীবী (বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট) বাবুল মোড়ল জানান, ১৮ মে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক রেজাউল করিম চৌধুরী ব্যবসায়ীকে কারাগার থেকে মুক্তির নির্দেশ দেন।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ওই ঘটনায় থানা পুলিশসহ যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়