ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সুন্দরবনে বিপন্ন প্রজাতির ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত  

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৫, ২৬ মে ২০২২   আপডেট: ১৬:০৬, ২৬ মে ২০২২
সুন্দরবনে বিপন্ন প্রজাতির ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত  

অবমুক্ত করা এসব কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট লাগানো রয়েছে

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ছেদনখালী খালের চরে অবমুক্ত করা হয়েছে মহাবিপন্ন প্রজাতির ১২টি ‘বাটাগুর বাসকা’ কচ্ছপ।

বুধবার (২৫ মে) বিকেলে স্যাটেলাইট লাগানো এসব কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) দুপুরে সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।  

কচ্ছপ অবমুক্ত করার সময় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদারসহ বন বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

আজাদ কবির জানান, সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে ১০টি ও খুলনা-পটুয়াখালী থেকে উদ্ধার করা ২টি বাটাগুর বাসকাসহ মোট ১২ কচ্ছপ ছেদনখালী খালের চরে অবমুক্ত করা হয়েছে। এসব কচ্ছপের পিঠে স্যাটেলাইট লাগানো রয়েছে। ফলে কচ্ছপগুলোর গতিবিধি আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারবো। এর মাধ্যমে এসব কচ্ছপের আচার-আচারণ ও জীবন সম্পর্কে আরো স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।  

তিনি আরো জানান, একটা সময় ছিলো যখন সুন্দরবনের লবনযুক্ত পানিতে বাটাগুর বাসকা ছিলো। বর্তমানে এ ধরনের কচ্ছপ আর দেখা যায় না। সুন্দরবনের কোথাও এ ধরনের কচ্ছপ আছে কি না, তা খুঁজতে ও কচ্ছপের চলাফেরা জানার জন্য এ ১২টি কচ্ছপ অবমুক্ত করা হয়েছে।  

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে গবেষকরা বাটাগুর বাসকা আছে কিনা তা খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে নোয়াখালী ও বরিশালের বিভিন্ন জলাশয়ে ৮টি বাটাগুর বাসকা পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ৪টি স্ত্রী ছিল। পরে সামুদ্রিক এ প্রাণীগুলো প্রজননের জন্য গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। 

বনবিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকরা নিবিড়ভাবে লালন পালন ও প্রজননের চেষ্টা করে বাটাগুর বাসকা গুলোকে। তারপরও তেমন সাফল্য পাওয়া যায়নি। তবে কয়েক বছরে আগে গাজীপুরে প্রায় ৯৪টি বাচ্চা দিয়েছিল ৮টি মা কচ্ছপ। 

সেখানে ভালো সাড়া পাওয়ায় ২০১৪ সালে মূল ৮টি বাটাগুর বাসকা ও তাদের জন্ম দেওয়া ৯৪টি ছানা সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। ২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি টি ডিম থেকে ৫৭ টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১ টি বাচ্চা পাওয়া যায়। 

২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২ টি ডিম থেকে ৩২ টি বাচ্চা পাওয়া যায়। ২০২০ সালে ১০ মে একটি কচ্ছপের ৩৫টি ডিম থেকে ৩৪টি বাচ্চা পাওয়া যায়। এসব বাচ্চা থেকে ২০১৭ সালে দুটি, ২০১৮ সালে পাঁচটি, ২০১৯ সালে পাঁচটি কচ্ছপ সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে অবমুক্ত করে বন বিভাগ। 

টুটুল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়