ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

চালের বাজারে নৈরাজ্য 

এ কে সাজু, নওগাঁ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩১, ৩১ মে ২০২২   আপডেট: ১৩:০৭, ৩১ মে ২০২২
চালের বাজারে নৈরাজ্য 

উৎপাদন বন্ধ করে যে যেভাবে পারছেন ধান মজুত করছেন। ঘাটতির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চালের দর। এখনই লাগাম টানতে না পারলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সামনে, বলছেন অনেকে। লাগামহীন চালের দর। অথচ বেশির ভাগ চালকলে সরবরাহ বন্ধ। ধান মজুত করে ঘাটতির অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে দর।

এ অবস্থায় নৈরাজ্যে পরিণত হয়েছে নওগাঁর চালের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি চালে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। 

নওগাঁর পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় প্রকার ভেদে সব ধরনের চালে বেড়েছে ৩৫০ থেকে ৪শ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ চাল ৪৪ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আটাশ ও পাড়িজা জাতের চাল ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। জিরা, মিনিকেট ও নাজির শাইল জাতের চাল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা কেজি দরে। কাটারি জাতের চাল ৬৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে।

খুচরা চাল বিক্রেতারা বলছেন, চালের বাজার একেবারে অস্থির। মিলগেটে সকালের দামের সঙ্গে মিল থাকছে না বিকেলের দামে। পাইকারি মোকামেই ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় প্রকার ভেদে সব ধরনের চালে বেড়েছে ৩৫০ থেকে ৪ শ টাকা।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপ এর সভাপতি আলহাজ্ব মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, উৎপাদন ঘাটতির ফলে কিছুটা প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তার সাথে দেশের কর্পোরেট হাউজগুলোর আগ্রাসী ভূমিকা অস্থির করেছে বাজার দর। এ অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই কর্পোরেট হাউজগুলো সরাসরি ধান ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা দাম বাড়াচ্ছেন ইচ্ছে মতো। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে ধান ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। 

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপ এর সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, হাতে গোনা কয়েকটি কর্পোরেট হাউজের দখলে চালের বাজার। মিল মালিকদের যে সিন্ডিকেটের দোষে দোষী করা হতো এখন সে সিন্ডিকেট কয়েকটি গ্রুপ কোম্পানির। যা আগামীতে ভয়াবহ রূপ নিবে। এই কর্পোরেট হাউজগুলো সময় মতো তাদের নিজস্ব (প্যাকেটে) মোড়কে চাল বাজারে ছাড়বেন। যা ভোক্তাদেরকে ক্রয় করতে হবে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা কেজি দরে। 

সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট এর কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য, জয়নাল আবেদীন মুকুল বলেছেন, সরকারের ধান চাল সংগ্রহের নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারের ধান চাল সংগ্রহের যে আয়োজন তাতে ২১ লাখ মে. টন ধান চাল সংগ্রহ করা যাবে। অপর দিকে বেসরকারি যে বড় বড় ব্যবসায়ী রয়েছে তারা ৯০ লাখ মে. টন ধান চাল সংগ্রহের ক্ষমতা রাখে। যার কারণে বড় বড় ব্যবসায়ীরা চালের উপর নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং পরবর্তীতে সিন্ডিকেট করেন। বাজার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে, সরকারকে পর্যাপ্ত ধান ক্রয় করতে হবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে। যা কম পক্ষে ৫০ লাখ মে. টন ধান। তা না হলে চালের বাজার চলে যাবে সিন্ডিকেটের দখলে। 

/টিপু/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়