ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আড়াই হাজার গ্রাহকের টাকা দিচ্ছে না সমিতি

ফারুক আলম, লালমনিরহাট || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ১৫ জুন ২০২২  
আড়াই হাজার গ্রাহকের টাকা দিচ্ছে না সমিতি

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় শাপলা সমবায় সমিতি লিমিটেড। এর সদস্য সংখ্যা আড়াই হাজার। এদের সবাই ক্ষুদ্র আমানতকারী। এসব আমানতকারীদের  টাকার মেয়াদ শেষে হলেও এখনো টাকা ফেরত দিচ্ছে না সমিতিটি। এদিকে নিজেদের কষ্ট অর্জিত টাকা ফেরত চেয়ে প্রায় তিন বছর ধরে স্থানীয় মাতবর, সমিতির গেট, সমবায় অফিসারের অফিসের বারান্দায় ঘুরছেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

শাপলা সমবায়ের অফিস স্টাফ সূত্রে জানা গেছে, সমিতিটি প্রথম দিকে ভালো চললেও, গত তিন বছর আগে স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করে সমবায় সমিতিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি।তারা কিছু হলেই সাবেক এক সমবায় কর্মকর্তাকে এনে মিটিংএ বসাতো। এতে বিভিন্ন প্রকার চটকদার কথা শুনে তারা তাদের কাজ চালিয়ে গেছে। এখন তারা সদস্যদের আসল টাকা দিচ্ছেনা। তাই কাজ করা সম্ভব হচ্ছেনা।

শাপলা সঞ্চয় প্রকল্পের জমা টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ ও বোনাসের পূর্ণতা ২ , ৩ , ৪ , ৫ ও ৬ বছর। জমাকৃত টাকার ওপর  ১০ % , ১৫ % , ২০ % , ২৫ % ও ৩০ % পর্যন্ত লভ্যাংশ দেয়ার কথা। এই লভ্যাংশের সঙ্গে আবার বোনাস দেওয়ার কথা বলেছে, সমিতিটির নথি। যা সদস্যদের খুব সহজেই কাছে টেনেছে।

সমিতিটির সদস্য নিখিল, অনুপ কুমার, আশাদুলসহ অনেকেই বলেন, তাদের টাকা জমা করার মেয়াদ শেষে লাভ পাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু গত নভেম্বরে তাদের কাছে জমা বই রেখে দেয়া হয়েছে। তারপর তাদের টোকেন দিয়ে দেয়। এরপর রাতারাতি বাড়ি বিক্রি করে পালিয়ে যায় সমিতির সেক্রেটারি  শফিকুল ইসলাম।

আদিতমারী থেকে ৫ কিলোমিটার দূরের নামুড়ী বাজার। সেখানে আমানতকারী  রয়েছে ২০০ জন। সেই বাজারের মধুসুধোন রায় বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জমা রেখেছি। মেয়াদও প্রায় শেষের পথে ছিলো। কিন্তু প্রায় তিন বছর থেকে শাপলা সমিতির আর কোনো হদিস পাচ্ছিনা।

সমিতির সভাপতি সামসুল আলম দুলুর সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে সমিতির সেক্রেটারি সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমারা আমাদের বাড়ি, গাড়ি, জমি বেচে টাকা দেওয়া শুরু করেছিলাম। সমিতির সদস্যরা যখনই বই জমা দেয় তখনই টাকা চায়। এসব কারণে টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়নি। আমি এখন নিঃস্ব। আমাদের সমবায় অফিসার সহোযোগীতা করতে চেয়েছেন। ইউএনওর মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে সহোযোগীতা করার কথাও বলেছেন। তারপর তিনি কোনো সহোযোগীতা করেন নি। এসব কারণে সব কিছু থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে। আমাদের টাকাও মাঠে পড়ে আছে। এখন পর্যন্ত ৮০ জনকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি। আমরা ৫০০ জনের কাছে টাকা পাবো ‘

সমিতির সাংগঠনিক সম্পাতক লেবু। তিনি বলেন, ‘আমি অনেকদিন থেকে সমিতির কাছ থেকে দূরে আছি। সমবায় অফিসারকে অভিযোগ দিয়েছি। তদন্ত করলে বোঝা যাবে আমি নির্দোষ।‘

সমবায় অফিসার ফজলে এলাহী বলেন, ‘আমি প্রথমে কথা বলার সময় অভিযোগ পাইনি। এখন কিছু অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের করার কিছু নেই। প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে আমরা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ভুক্তভোগী আমানতকারীদের টাকা আদায় করে দেবো। সদস্যরা মামলা না করাতে শামসুল আলম দুলুকে কিছুই করতে পারছি না। আমাদের করার কিছুই নেই।’

মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়