বাজারে এসেছে হাড়িভাঙ্গা, কেজি ৬০ টাকা 

রংপুরের বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুমিষ্ট হাঁড়িভাঙ্গা আম। ইতোমধ্যে রংপুরসহ জেলার আশপাশের উপজেলাগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে এ আম। বাজারে এই আম কাঁচা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা পাকা আম বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। 

রংপুর জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় প্রায় ১ হাজার ৮৮৭ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আম উৎপাদিত হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৪৩৬ মেট্রিক টন। আবহাওয়া ভালো থাকলে এ আম বিক্রি করে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবেন আম চাষিরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) রংপুরের টার্মিনাল, মর্ডান মোড়, লালবাগ রেল গেট, সিটি বাজারসহ মিঠাপুকুরের কয়েকটি স্থান ঘরে দেখা গেছে, ভ্যানে বা শেডের উপরে ক্যারেটে করে থরে থরে সাজিয়ে রেখে কাচা-পাকা আম বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এসব বাজারে কাচা আম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর পাকা প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

লালবাগ রেলগেটে কথা হয় পাইকারি ও খুচরা আম বিক্রেতা রশিদ বাবুর সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ থেকে বাগানিরা অল্প করে আম নামাতে শুরু করেছেন। সরকারের বেধে দেওয়া ১৫ জুন অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে পুরোদমে গাছ থেকে হাড়িভাঙ্গা আম নামানোর কাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ভোরে বাগানে গিয়ে গাছ মালিকদের কাছ থেকে পাইকারি দরে আম কিনে এখানে এনে বিক্রি করছি। এখানে কাঁচা আম সাইজ অনুযায়ী ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এখনও পুরোদমে আম বেচা কেনা শুরু হয়নি। শুরু হলে কিছুটা দাম কম হতে পারে।

হাড়িভাঙ্গা আমের গোড়াপত্তনকারী মৃত নফল উদ্দিন পাইকারের ছেলে আমজাদ হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দুই একরের দুটি বাগান ৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে এবার পরিচর্যা শুরু করেছি। এবার শুরুতে কয়েক দফায় শীলাবৃষ্টি আর বৈরি আবহাওয়ার কারণে আমের সংখ্যা গতবারের তুলনায় ২০ শতাংশ কম। কিন্তু ফলের সাইজ বেশ ভালো। সে তুলনায় এবার আমের দাম একটু বেশি থাকতে পারে। গত দুই দিন ধরে গাছ থেকে আম নামাতে শুরু করেছি। আমার বাগান থেকে স্থানীয় পাইকাররা এসে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

সড়কের পাশে ঝুড়িতে করে হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করতে দেখা গেছে অনেক আম ব্যবসায়ী ও পাইকারদের 

অন্য এলাকা থেকে পাইকাররা আসছে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সবেমাত্র আম নামানো শুরু হয়েছে। এখনো দূরের জেলার বড় বড় পাইকাররা পুরোদমে আসেননি। তবে অনেকে যোগাযোগ করছেন। দুই একদিনের মধ্যে তারা আম নিতে ট্রাক নিয়ে চলে আসবেন। তখন বাজার হয়তো দাম একটু বাড়তেও পারে, কারণ গতবারের তুলনায় এবার ফলন কিছুটা কম।’

লাগবাগ রেলগেটে আম কিনতে আসা শ্যামল নামের এক চাকরিজীবী বলেন, ‘হাড়িভাঙ্গা আম বাজারে নামতে শুরু করেছে এই খবরটি বাসায় আমার ছেলে মেয়েরা ফেসবুকে দেখেছে। তাদের বায়না আজকেই আম কিনে আনতে হবে তাই এসেছি। তিন কেজি কাঁচা আম কিনলাম ৬০ টাকা করে। আর ২ কেজি পাকা আম নিয়েছি ৪৫ টাকা কেজি করে।’