ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বাড়ছে যমুনার পানি, ভাঙছে নদীর পাড়

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৪ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১১:০৮, ৪ জুলাই ২০২২
বাড়ছে যমুনার পানি, ভাঙছে নদীর পাড়

আবারো বাড়তে শুরু করেছে যমুনার পানি। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়ছে। দ্বিতীয় দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে তলিয়ে যাচ্ছে ফসলি মাঠ। এছাড়া পানি বাড়ায় জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।

সোমবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান একথা জানান। 

হাসানুর রহমান জানান, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ৫দিন ধরে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে যমুনার পানি বাড়া অব্যহত রয়েছে।’

এদিকে যমুনা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনে শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নে ২০টি ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো অনেক ঘর-বাড়ি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদীতে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। 

চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জে ৭ হাজার ৭৪১ দশমিক ৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে প্রায় ৬৫ হাজার কৃষকের ১৪০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম জানান, দুই দফায় গালা এলাকায় ১৬টি ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এর আগে ২০ হাজার বালির বস্তা ফেলা হয়েছিল। নতুন করে আবারও ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে দেড় টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ভাঙনকবলিত মানুষরা বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। রোদ ও বৃষ্টি থেকে তাদের রক্ষায় পলিথিন বা তাবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, চলতি বন্যায় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ১২ হাজার ৫৯৯ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যায়। এর মধ্যে ৭ হাজার ৭৪১ দশমিক ৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার ৪৫০ কৃষক। এই বন্যায় ১৪০ কোটি ৫০ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ফসল নষ্ট হয়েছে। নষ্ট হওয়া ফসলের মধ্যে রয়েছে রোপা আমন, বোনা আমন, আউশ ধান, তিল, আখ, গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি, পাট, ভুট্টা, পেঁপে, কাউন, মরিচ ও বীজতলা। চলতি বন্যায় পাট চাষিদের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন এলাকায় বালুর জিও বস্তা ফেলা অব্যাহত আছে। ওই এলাকা ঝুকিমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বালুর বস্তা ফেলার কাজ অব্যাহত থাকবে। তবে যমুনার পানি বাড়লেও বন্যার সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানান।

অদিত্য/ মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়