পাওনা টাকা না দেওয়ায় গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ৮

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে পাওনা টাকা না দেওয়ায় শালিস বৈঠকের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গৃহবধূ ঝিমি বেগমকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে অসিম মোল্লা ও তার লোকজন। এ সময় ওই গৃহবধূর স্বামী নুর আলমকেও (৪৫) কুপিয়ে আহত করা হয়।

রোববার(৩জুলাই) রাতে উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের আইকদিয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবু বকর মিয়া এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আহত নুর আলমের ভাই হাবিবুর রহমান মুন্সী বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় ২৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

নিহত গৃহবধূ ঝিমি বেগম ও তার স্বামী নুর আলম দুইজনই আইকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

ওসি আবু বকর মিয়া মামলার বরাত দিয়ে জানান, ৫০ মন ধান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি ইরি মৌসুমের আগে নিহতের স্বামী নুর আলম মুন্সী প্রতিবেশী অসিম মোল্লার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু, হঠাত করে বিলের পানি বেড়ে যাওয়ায় ধান তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে ধান বা টাকা কোনটাই পরিশোধ করতে পারেননি নুর আলম। এ নিয়ে সম্প্রতি এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে আগামী ১৫ নভেম্বর মধ্যে অসিম মোল্লার টাকা পরিশোধ করতে নুর আলমকে বলা হয়। কিন্তু রোববার রাতে নুর আলম মুন্সি ও তার স্ত্রী ঝিমি বেগমকে পাওনা টাকা লেনদেনের বিষয়ে সালিশ বৈঠকের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান অসিম মোল্লা। সেখানে গেলে পাওনা টাকা সুদ সমেত ফেরত দেওয়া-নেওয়া নিয়ে নিহতের স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয় অসিম মোল্লার। এক পর্যায়ে নুর আলমকে মারধর করে অসিম মোল্লা ও তার লোকজন। এসময় স্বামীকে বাঁচাতে গেলে ঝিমি বেগমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে প্রতিপক্ষের লোকজন।

পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঝিমি বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থাযী নুর আলমকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি আরো জানান, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে৷ এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ৮ জনকে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে৷ পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে৷