ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

রাজশাহীতে ৩০০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫২, ১২ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১২:৪৯, ১২ জুলাই ২০২২
রাজশাহীতে ৩০০ টাকায় গরুর চামড়া বিক্রি

ফাইল ফটো

রাজশাহীতে এবার নামমাত্র মূল্যে ছাগলের চামড়ার বেচাকেনা হয়েছে। অনেকে ফ্রি-তেই নিয়ে গেছেন চামড়া। কাঙ্খিত দাম মেলেনি গরুর চামড়ারও। সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দাম না পাওয়ার ক্ষোভ রয়েছে কোরবানি দাতাদের মধ্যে। 

রাজশাহীর মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের দাবি, আড়তে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা হলে তাদের লাভ হতো। কিন্তু প্রত্যেকবার যেটা হয়, এবারও তাই হয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে আড়তদাররা কম দামে চামড়া কিনেছেন। ফলে বাধ্য হয়ে তাদেরকেও কম দামে চামড়া কিনতে হচ্ছে।

জানা গেছে, রাজশাহীতে এবার ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে গরুর চামড়া কিনেছেন ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে। এছাড়া খাসির আর বকরির চামড়া তারা কিনেছেন ১০-৩০ টাকা ও বকরি ৫-১০ দরে। অনেকে কোরবানি দাতা দাম শুনে ফ্রিতেই চামড়া দিয়ে দিয়েছেন।

রাজশাহীর পবা উপজেলার মধুপুর এলাকার জিয়ারুল ইসলাম কোরবানির ঈদেই চামড়া স্থানীয় আড়তে বিক্রি করেন। তিনি জানান, ঘুরে ঘুরে কম দামে চামড়া কিনেছিলেন। আগে থেকেই আঁচ করেছিলেন চামড়ার বাজার এবারও খারাপ থাকবে। হয়েছেও তাই। আড়তে ছাগলের চামড়ার বিভিন্ন খুঁত ধরে নেওয়া হচ্ছে না। সেগুলো আড়তেই রেখে এসেছেন। ভালোগুলোরও দাম পাননি। দিনশেষে কোনমতে খরচটা তুলতে পেরেছেন।

কোরবানি দাতারা বলছেন, কোরবানির চামড়া গরিব-মিসকিনদের হক। চামড়া বিক্রির টাকা তাদেরকেই দান করে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে চামড়ার যে দাম তা কতোটা খারাপ তা দাম শুনলেই বোঝা যায়৷

পবার দামকুড়ার বাসিন্দা টিয়া আলম বলেন, এখন এককাপ চা-এর দাম ১০ টাকা। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা একটি ছাগলের চামড়ার দাম বলছে ৫ টাকা। এর চেয়ে লজ্জার আর কি আছে। এখানে গরিবের হক নষ্ট করা হচ্ছে।

এ বছর ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট চামড়া ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এ ছাড়া খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ১২ থেকে ১৪ টাকা। তবে রাজশাহীর কোথাও বর্গফুট হিসাবে চামড়া কেনা হয়নি। এর চেয়ে কম দামে চোখের আন্দাজেই চামড়া কেনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম ভালো পেয়েছেন বলে মনে করেন রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি আসাদুজ্জামান মাসুদ।  তিনি বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়ার বেচাকেনা হয়েছে। তবে চামড়া ছড়ানোর সময় অনেকেই সেটি কেটে ফেলেন। সেগুলো চোখের আন্দাজে দাম দেওয়া হয়। আর খুব বেশি কাটাছেঁড়া হলে সেই চামড়া বিক্রি করা যায় না।  তাই আমরাও সেই চামড়া কিনছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এবারও আড়তে অনেকেই অচল চামড়া ফেলে গেছে। সেগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে ধ্বংস করা হবে।’

আসাদুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘মাদরাসাগুলোর মাধ্যমেই এ বছর সবচেয়ে বেশি চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। অনেকে মাদরাসাই সরাসরি চামড়া দান করে গেছেন। এবার গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা করেও কিনেছেন। খাসির চামড়া ৪০-৮০ এবং বকরির চামড়া ২০-৪০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদের তথ্যমতে এবার জেলায় আনুমানিক ১ লাখ ৯৪ হাজার ছাগল ও ভেড়া এবং ৭২ হাজার গরু কোরবানি হয়েছে।

তানজিমুল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়