ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কক্সবাজার সৈকত

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ১২ জুলাই ২০২২  
পর্যটকদের পদচারণায় মুখর কক্সবাজার সৈকত

ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনে পর্যটকের ভিড়। ছবি: রাইজিংবিডি

ঈদুল আজহার তৃতীয় দিনে কক্সবাজারে পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। ঈদের ছুটিতে হোটেল কক্ষ বুকিং দেওয়া পর্যটক ও নতুন করে বেশকিছু পর্যটকের আগমনে সমুদ্র সৈকত মুখরিত।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুর থেকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সীগাল ও লাবণী পয়েন্টে পর্যটকের প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সমুদ্রস্নান, টায়ার নিয়ে ঢেউয়ের সাথে দুল খাওয়া, সাঁতারকাটা থেকে শুরু করে সাগরের সঙ্গে তাদের গভীর মিতালী পরিলক্ষিত হয়। শুধু তা নয় বিচ বাইক, ঘোড়া ও জেটস্কির ড্রাইভারও পর্যটকদের রাইড করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি জুবাইর হাসান বলেন, শহরের অস্টারইকো হোটেলে ঈদের আগে থেকে রুম বুকিং দেওয়া ছিল। ঈদের ব্যস্ততার জন্য ঈদের ২দিন পর হোটেলে ওঠার কথা বলে রুম বুকিং দিয়েছিলাম। আজ সকালে কক্সবাজার পৌঁছালাম। সমুদ্র সৈকতে এসে পর্যটকদের আনন্দ দেখে নিজেদেরও আনন্দ লাগছে।

কুমিল্লা কান্দিরপাড় থেকে আসা পর্যটক সুমন সাদিক বলেন, আজ সকালে এসেই ২দিনের জন্য রুম নিলাম। ভাবছিলাম এবার কক্সবাজারে পর্যটক কম হবে কিন্তু এসে দেখতে পাচ্ছি অনেক পর্যটক।

এদিকে, বর্ষা মৌসুম হিসেবে সাগর একটু উত্তাল রয়েছে। তারপরও সেই চিন্তা মাথায় না রেখে নোনাজলে হৈ হুল্লোড়ে মেতেছে পর্যটকরা। গলা সমান পানিতে গিয়ে টায়ারে ভাসছে অনেকে। কেউ কেউ খালি গায়ে সাঁতার কাটছে। তবে তাদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নজরদারিতে রেখেছেন বিচকর্মী ও সী সেইফ লাইফগার্ডদের সদস্যরা।

বিচকর্মীদের সুপারভাইজার মাহবুব আলম বলেন, গত ২দিনের চেয়ে আজ সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে অনেক পর্যটক। এভাবে পর্যটক বেড়ে যাবে তা কল্পনাও করিনি। সকাল থেকে সৈকতের ৩-৪টি পয়েন্ট থেকে পর্যটকরা নামছেন। কেউ কেউ দলবদ্ধ হয়ে ফুটবল খেলছেন, কেউ ঘোড়ায় চড়ে মজা করছেন, ছবি তোলছেন আবার কোনো কোনো মা-বাবা বাচ্চাদের নিয়ে পানির কাছে মাটির ঘর বানিয়ে আনন্দে মেতেছেন। তাদের সচেতন করতে আমরা মাঠে রয়েছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সচেতনতার ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সী সেইফ লাইফ গার্ডের সদস্য মো. ইউসুফ জানান, আমরা ওয়াচ টাওয়ার থেকে পানিতে নামা পর্যটকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখছি। কেউ যেন গভীর পানিতে না নামেন সে বিষয়ে সজাগ করা হচ্ছে। নিজেরা পানিতে গিয়ে তাদের সচেতন করছি। আর দূরে অবস্থান করা পর্যটকদের বাঁশি দিয়ে অ্যালার্ট করছি।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) কক্সবাজারের সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, আমাদের একটা আশা ছিল ঈদের তৃতীয় দিন থেকে পর্যটক আসতে শুরু করবে কক্সবাজারে। ঈদের দিন ও পরের দিন মানুষ কর্মব্যস্ততায় থাকে কিন্তু তৃতীয় দিন থেকে ফ্রি থাকে। তবে ঈদের আগে হোটেল কক্ষ কম বুকিং হলেও আজ থেকে বুকিং হচ্ছে। ঈদের আগে আমাদের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বুকিং করতে কষ্ট হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে নতুন-পুরাতন মিলিয়ে ৮০ শতাংশের উপরে হোটেল কক্ষ বুকিং হয়েছে। আমরা চাই পর্যটকরা কক্সবাজার আসুক। কক্সবাজারের মতো কোনো স্থানে এতো বেশি আনন্দ উপভোগ করতে পারবে না। 

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের অবস্থা বেহাল দশা। পর্যটকরা বাসযোগে কক্সবাজার আসতে কষ্ট পাচ্ছেন। যদি সড়কটা ঠিক হতো আরও বেশি পর্যটক আসতেন। 

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ নজরদারিতে রয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন স্পটগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকধারী টিমসহ কয়েকটি টিমে কাজ করছে। 

/তারেকুর রহমান/সাইফ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়