ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

শ্রাবণেও দেখা নেই বর্ষার, বিপাকে আমন চাষিরা

মোসলেম উদ্দিন, দিনাজপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ১৮ জুলাই ২০২২  
শ্রাবণেও দেখা নেই বর্ষার, বিপাকে আমন চাষিরা

বাংলা দিনপঞ্জির হিসাবে শ্রাবণ মাস শুরু হয়েছে।  কিন্তু বর্ষার এই ভরা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায়। বিশেষ করে এই বিভাগের দিনাজপুর জেলায় আমন ধান চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টি না হওয়ায় মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। 

সোমবার (১৮ জুলাই) সকালে জেলার হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে  মাঠের মাটি শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেছে। মাটিতে কোনো রস নেই, প্রায় ধানি জমি রোদের তেজে ফেঁটে চৌচির হয়ে গেছে। 

জানা গেছে, প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবণ
মাসে দিনাজপুরে কৃষকরা জমিতে ধানের নতুন চারা লাগানোর কাজ শুরু করেন। এ সময় মাঠে বর্ষার পানিতে থৈথৈ করে, আর তাতে ভাসতে থাকে আমন চাষিদের স্বপ্ন। 
কিন্তু এবারের আমন মৌসুমের চিত্র আলাদা। গত দুই সপ্তাহ ধরে সূর্যের তাপের তীব্রতায় জনজীবন অতিষ্ঠ, মানুষের মাঝে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস। 

হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষক আকরাম হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জীবনে এমন ওয়েদার কখনও মুই (আমি) দেখুনি (দেখিনি)? এ্যাঙ্কা  সময় ((এসময়) মাঠত হামার পানিতে থৈথৈ করে। এবার ক্যাম্বা বর্ষার দেখা নাই, পানি না হলে ক্যাঙ্কা (কেমন) করে মানুষ আবাদ করবি। খুবি চিন্তায় আছি মুই, কতবেনে (কখন) পানি হবে আর জমি চাষ করমু?’

বোয়ালদাড় গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘এবার যে কি করবো বলতে পারছি না। এখনও বর্ষার কোনো লক্ষণ দেখছি না। পানি সেচ দিয়ে আবাদ করলে পড়তা (লাভ) করতে পারবো না।’ 

সাতনি গ্রামের কৃষক মাসুদ রানা বলেন, ‘এই সময় প্রতি বছর আমার জমিতে বর্ষার পানি জমে থাকতো। পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি তৈরি করতাম। এবার তো বর্ষা নাই, সব জমি শুকিয়ে আছে, কবে বৃষ্টি হবে আর কখন আমন ধান লাগাবো?’

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৮ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আমন ধান মূলত কৃষকরা দোগাছি চারা লাগিয়ে চাষ করে থাকে। আমরা মাঠ ঘুরে দেখছি প্রায় মাঠের দোগাছি চারাগুলো এখনও ভালো আছে। আগামী এক সপ্তাহ ভালো থাকবে এসব চারা। আশা করছি এর মধ্যে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে চারার কোনো ক্ষতি হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু বৃষ্টি নেই সেহেতু আমরা কৃষকদের পানি সেচের ব্যবস্থা করে জমি চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

মোসলেম/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়