ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা

ইমরান হোসেন, বরগুনা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৫, ২৫ জুলাই ২০২২   আপডেট: ১৮:১৬, ২৫ জুলাই ২০২২
ট্রলার বোঝাই ইলিশ নিয়ে ফিরছেন জেলেরা

সাগর থেকে ট্রলারে ইলিশ বোঝাই করে পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে ফিরতে শুরু করেছেন বরগুনা উপকূলের জেলেরা। ঘাটে ফিরেই দ্রুত ট্রলার মালিক বা আড়তদারদের মাছ বুঝিয়ে দিয়ে আবারো তারা ফিরে যাচ্ছেন গভীর সমুদ্রে।

জেলেরা বলছেন, যে পরিমাণ মাছ আশা করেছিলেন তার চেয়েও বেশি মাছ আটকা পড়েছে তাদের জালে।

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পরিচালক মো. লুৎফর রহমান (বিএন) বলেন, সোমবার (২৫ জুলাই) বিএফডিসির মৎস্য বাজারে মোট ১১ হাজার ৮৬৯ কেজি বিক্রি মাছ হয়েছে। তার মধ্যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৭৮০ কেজি। মোট মাছ বিক্রি হয়েছে ৬৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকার। এতে প্রায় ১লাখ টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার।’

মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইলিশসহ সব মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে সাগরে। তাই জাল ফেললেই মাছ পাচ্ছেন জেলেরা। প্রচুর মাছ পাওয়ায় হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে।

সাগরে মাছ ধরায় সরকারের দেওয়া ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২২ জুলাই শেষ হয়। এর পরপরই মাছ ধরতে জাল-দড়ি ও ট্রলার নিয়ে সাগরে যান উপকূলের জেলেরা। 

সোমবার সকালে দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (বিএফডিসি) পাথরঘাটায় গিয়ে দেখা যায় ইলিশ বোঝাই ট্রলার একের পর এক ঘাটে ভিরছে। এসব ট্রলারে থাকা জেলেরা দ্রুত মাছ আড়তদারদের কাছে রেখে আবারো ফিরে যাচ্ছেন গভীর সমুদ্রে।

এফবি মা ট্রলারের মাঝি শহিদুল ইসলাম ফকির রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা মেনে গভীর সাগরে মাছ শিকার করা বন্ধ রেখেছিলাম ৬৫ দিন। ২৩ জুলাই মধ্যরাতে ট্রলার নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় গিয়ে জাল ফেলি। শুরুতেই প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ে আমাদের জালে। তাই অতিরিক্ত তেল খরচ করে দ্রুত গতিতে ট্রলার নিয়ে মালিকের কাছে মাছ রাখতে এসেছি আমরা। মাছ নামানো শেষ হলেই আবারও চলে যাবো  সাগরে।‘ 

একই ট্রলারের জেলে বরুন শীল বলেন, ‘৬৫ দিন পর সাগরে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে মাছ পেয়েছি। শ্রাবণ মাস, বৃষ্টি হচ্ছে, তাই ইলিশ পানির একদম উপরভাগে চলে এসেছে। তাই সব জেলেদের জালে মাছ ধরা পড়ছে।’ 

এফবি সাইফুল্লাহ ট্রলারের মাঝি সাদেক আলী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার দিনগুলোতে অনেক কষ্ট করেছেন জেলেরা। এবার সেই  কষ্টের লাগব হয়েছে। আমরা প্রচুর মাছ পাচ্ছি।’ 

একই ট্রলারের জেলে রশিদ খান, কবির হোসেন, আলতাফ, হিরনসহ কয়েকজন বলেন,  আমরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করিনি৷ আল্লাহ আমাদের নিরাশ করেননি।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘যেসব জেলেরা সাগর মোহনায় মাছ শিকার করেন, তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। সব ট্রলারই মাছ বোঝাই হয়ে ফিরেছে। যারা গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে গেছেন, তারা আরও ৪-৫ দিন পর ফিরবেন।’ 

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, ‘জেলেরা ইলিশসহ নানান ধরনের মাছ পাচ্ছেন সাগর মোহনায়। গভীর সাগরে যেসব জেলেরা মাছ শিকার করছেন, তারাও প্রচুর মাছ পাবেন। এসব সরকারের বৈজ্ঞানিক পরিক্ষার ফল। সরকারের নানা তৎপরতার কারণেই প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে।’

দেশের সমুদ্র সীমায় মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষে সরকার ২০১৯ সাল থেকে ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়