শাবিপ্রবি শিক্ষার্থী বুলবুলের বাড়িতে মাতম
নরসিংদী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
বুলবুলের মরদেহ পৌঁছালে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। ছবি: রাইজিংবিডি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে মাতম চলছে।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় নরসিংদীর নন্দিপাড়ায় বুলবুলের মরদেহ পৌঁছালে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় এলাকা।
আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী ছুটে এসে নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানায়। ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাগল প্রায় মা ইয়াসমিন বেগম।
একজন বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করার স্বপ্ন ছিল বুলবুল আহমেদ ও তার পরিবারের। একমাত্র বড় ভাইয়ের উপার্জন ও বুলবুলের পাঠানো টিউশনির টাকায় চলতো তাদের পিতৃহীন নিম্নবিত্ত পরিবারটি। হঠাৎ এমনভাবে দুর্বৃত্তের হাতে বুলবুলের খুন হওয়াকে পরিকল্পিত হত্যা মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা।
শাবিপ্রবির লোক-প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদ নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত ওহাব মিয়ার ছেলে।
নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভাইকে হারানোর শোকে আহাজারি করছেন বড় বোন সোহাগী আক্তার। স্বপ্ন ছিলো, ভাই বুলবুল বিসিএস ক্যাডার হয়ে পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করবে। হাল ধরবে ৭ মাস আগে মারা যাওয়া পিতা ওহাব মিয়ার সংসারের। কিন্তু দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সেই স্বপ্ন মুছে গেলো নিমিষেই।
ছেলেকে নিয়ে বড় স্বপ্ন থাকলেও আজ ছেলের লাশের পাশে মা ইয়াসমিন বেগম বিলাপ করছেন। সোমবারই মায়ের কাছে নতুন জুতা কেনার জন্য টাকা চেয়েছিলেন ছেলে বুলবুল। নিম্নবিত্ত মা ছেলের সেই জুতা কেনার শখও পূরণ করতে পারেননি বলে বারবার আফসোস করে একই প্রলাপ করছেন।
ছিনতাইকারীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন দাবি করলেও এর পেছনে অন্য কোন কারণ আছে এবং এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি পরিবারের।
বুলবুল আহমেদ
এদিকে বুলবুল হত্যার প্রতিবাদে চিনিশপুরে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
বুলবুল ২০১৬ সালে নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৮ সালে আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। একই বছর ডিসেম্বরে ভর্তি হন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে।
চিনিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান তুহিন বলেন, গত ৭ মাস আগে মারা যান বুলবুলের পিতা ওহাব মিয়া। তারপর একমাত্র বড় ভাইয়ের বেসরকারি চাকরি ও বুলবুলের টিউশনির টাকায় চলত তাদের ৫ সদস্যের নিম্নবিত্ত সংসার। মেধাবী ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি এখন অসহায় হয়ে পড়েছেন।
পড়ুন
/এইচ মাহমুদ/সাইফ/
আরো পড়ুন