ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

সন্তানকে বাঁচাতে দুখিনী মায়ের আকুতি

বগুড়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১০, ৯ আগস্ট ২০২২   আপডেট: ১৮:০৪, ৯ আগস্ট ২০২২

স্বামী ও এক সন্তান হারিয়ে ছোট ছেলে শাহীন আলমকে (১৩) নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন আমিনা খাতুন। এই ছেলেই তার জীবনের একমাত্র ভরসা-প্রদীপ। সেই প্রদীপশিখায় সংসারের সুখ-দুঃখ, অভাব আড়াল হতো। ছেলে একদিন বড় হবে- এই স্বপ্ন বুকে নিয়ে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু আকড়ে ধরেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই জীবন-ঝড়ে প্রদীপ আজ নিভতে বসেছে। মা-ছেলের ছোট্ট সংসারে এখন হতাশা এবং শঙ্কার কালো মেঘ। 

শাহীন আলম হৃদরোগে আক্রান্ত। একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে ওঠে। ভারী কাজ করতে গেলে দম বন্ধ হয়ে আসে। বুকে ব্যথা হয়। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে তারা জানিয়েছেন শাহীন আলমের হৃৎপিণ্ডে ছিদ্র রয়েছে। এ কারণেই এই শারীরিক সমস্যা।  

প্রায় এক বছর আগে রোগটি ধরা পড়ে শাহীন আলমের। এই সময়ের মধ্যে অনেক চেষ্টা করেও দুখিনী মা সন্তানের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করতে পারেননি। যতটুকু সঞ্চয় ছিল তাও ইতোমধ্যে ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় করেছেন। অথচ মাত্র ৩ লাখ টাকা হলেই অকালে ঝরে যাওয়ার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে তার প্রাণপ্রিয় সন্তান। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে শাহীনের বাবা মুনসুর আলী মারা গেছেন। তাদের জমি নেই, নেই থাকার জন্য নিজস্ব ঘর। তবে সম্প্রতি ধুনট সদরে উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় ঘর পেয়েছেন। বর্তমানে সেখানেই থাকছেন তারা। 

শাহীন আলম জানান, তিনি জাহিদুল ইসলাম জুয়েল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু অসুখ হওয়ার পর শারীরিক পরিশ্রম করতে পারেন না। একটু জোরে হাঁটলেই হাঁপিয়ে ওঠেন। ফলে কাজ ছেড়ে দিতে হয়েছে।

আমেনা বেগম দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, স্বামী-সন্তান হারিয়ে আমি শাহীনকে বুকে আগলে মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে কোনোরকমে বেঁচে আছি। সেই সন্তানের অসুখ আমার বুক ঝাঝড়া  করে দিয়েছে। 

সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন আমেনা বেগম। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কিছু অর্থ সহযোগিতা পেয়েছেন তিনি। কিন্তু আরো অর্থ প্রয়োজন। হৃদয়বানদের তিনি ০১৭৫৩২৬৯৪৫৬ নাম্বারে বিকাশ করার অনুরোধ করেছেন।

ইতোমধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহানুভব ব্যক্তি শাহীন আলমের চিকিৎসার অবশিষ্ট ব্যয়ভার বহন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ হলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে শাহীনের চিকিৎসা শুরু হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। 

এনাম/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়