ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

সাগর উত্তাল, ঘাটে ফিরেছে মাছ ধরার ট্রলার

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩১, ১০ আগস্ট ২০২২  
সাগর উত্তাল, ঘাটে ফিরেছে মাছ ধরার ট্রলার

নিম্নচাপের কারণে উত্তাল হয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বঙ্গোপসাগর। সাগরের তীব্র ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করা জেলেরা ফিরে এসেছেন দেশের সর্ববৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বরগুনার পাথরঘাটার বিএফডিসি ঘাটে। মাছ শিকারের ভরা মৌসুম চললেও জেলেরা হতাশ হয়ে বসে আছেন আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায়।

এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি দুলাল শিকদার রাইজিংবিডিডটকম-কে বলেন, ‘সাগরে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বুধবার (১০ আগস্ট) ভোর রাত থেকে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় মাছ শিকার শুরু করে প্রায় ৩ শতাধিক ট্রলার। সকাল থেকে সাগর ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। অনেকে নিরাপদে আশ্রয় নেয়। কেউ সুন্দরবনে ট্রলার নোঙর করে। আবার অনেকে পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চলে যায়। তারপরও দেড় শতাধিক ট্রলার মাছ শিকার করতে থাকে। এ সময় ভারী বর্ষণের সঙ্গে বাতাস শুরু হয়। বাতাস ও ঢেউয়ের তোড়ে উল্টে যায় এফবি নিশান ফিস নামে একটি ট্রলার। এর মধ্যে ৬ জন উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ ১০ জেলে। সাগর আরও ভয়াবহ হতে থাকে। এরপর আমরা পাথরঘাটা মৎস অবতরণ কেন্দ্রে চলে আসি‌।’  

এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি নিজাম মল্লিক রাইজিংবিডিডটকম-কে বলেন, ‘পুরো বঙ্গোপসাগর এখন জেলেশূন্য। সমুদ্রের এতটা ভয়াবহ অবস্থা গত ১০ বছরে জেলেরা দেখেনি। দুপুরে আমরা অন্তত ৭০টি ট্রলার নিয়ে একযোগে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে চলে আসি।’ 

ডুবে যাওয়া এফবি নিশান ট্রলারের জেলে মো. সোহেল (২৪) মুঠোফোনে রাইজিংবিডিডটক-কে বলেন, ‘সাগর উত্তাল। এই কিছু দিন আগে ৬৫ দিনের মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তারপরও আমরা ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকার করছিলাম। মাছ শিকার না করলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। সেই ঝুঁকি নিতে গিয়ে আমার সঙ্গে ১০ জন জেলে এখনও নিখোঁজ।’  

মাছ ব্যবসায়ী এনামুল হোসেন রাইজিংবিডিডক-কে বলেন, একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় এই পেশার মানুষ পথে বসতে শুরু করেছে। তার মধ্যে আবার সাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জেলেরা মাছ শিকার করতে পারছে না। প্রত্যেক ডিলার দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয় করে সমুদ্রে জেলেদের পাঠিয়েছে। জ্বালানি তেলের দামও বৃদ্ধি। এর মধ্যে এই খারাপ আবহাওয়ার কারণে সব ট্রলার খালি হাতে ফিরে এসেছে।  

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে এখন একটি ট্রলারও নেই। বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের ১৬ শতাধিক ট্রলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাট ও মাছের খাল এলাকায় নোঙর করে আছে। আমরা সব জেলে ও ট্রলার মালিকদের অনুরোধ করেছি, সাগর স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত কেউ যেন মাছ শিকার করতে না যায়।’  

এফবি নিশান ট্রলারের এখনো ১০ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির একটি বোর্ড, পাথরঘাটা কোস্টগার্ড, পটুয়াখালী কোস্টগার্ড ও নোয়াখালী কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে। এর আগে আরেকটি ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় সেই ট্রলার উদ্ধার করেছি। 
 

ইমরান/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়