ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জমি বেদখল, তাই হোটেল শ্রমিক মহেষ 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৫, ১৩ আগস্ট ২০২২  
জমি বেদখল, তাই হোটেল শ্রমিক মহেষ 

মহেষ চন্দ্র বর্মণ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নে চোপড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মহেষ চন্দ্র বর্মণ। শহরের হোটেলে দিনমজুরিতে কাজ করেন তিনি। সেখানে দৈনিক পাওয়া ৩০০ টাকা দিয়ে চলছে তার ৫ সদস্যের পরিবার।

যদিও এ সময় তার স্বচ্ছল জীবনযাপন করার কথা। পৈত্রিক সূত্রে তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমির মালিক। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা। কিন্তু অবৈধ দখলদারের খপ্পরে পরে সেই জমি তার জন্যে এখন শুধুই স্বপ্ন।

মহেষ চন্দ্র বর্মণের অভিযোগ, ‘বাবা বেঁচে থাকতেই জমি কিনেছেন৷ আমার বাবার নামে জমি রেকর্ড করা হয়েছে। সেই জমিতে চাষাবাদ করে সংসার চালাতেন বাবা। তিনি মারা যাওয়ার পরে জমি জবরদখলে নেন গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি সোহেল শাহ্ ও তার চাচারা।’ এ সময় জমির দলিল ও নামজারির প্রমাণপত্র দেখান মহেষ।

মহেষ বলেন, ‘আমি জমিতে হাল দিয়ে আসি আর উনারা জোর করে ফসল ফলান। আমি নিরূপায় হয়ে থাকি। এ দিকে বাবার দেওয়া শেষ সম্বল ওই সাড়ে তিন বিঘা জমি বেদখলে থাকায় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি হোটেলে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালায়।’ 

এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ কোথাও দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে মহেষ বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখনও বসা হয়নি। আমি তো হিসাব বুঝি না। জমির কাগজপত্র যা আছে সব দেব। আইনত যদি আমি জমির মালিক না হই, তাহলে জমি নেব না। আর যদি জমির মালিক হই, তাহলে যেন আমার বাবার শেষ সম্বল আমাকে ফেরৎ দেওয়া হয়।’

স্থানীয়রা বলছেন, মহেষের বাবা বিশ্বনাথ বর্মণ ওই জমিতে চাষাবাদ করতেন। সেই জমির পাশে অন্য অন্যের জমি কিনে নেন সোহেল শাহের পরিবার। তখন থেকে তারা পুরো জমিটায় নিজেদের করে রেখেছেন— বিশ্বনাথের ছেলে এমন অভিযোগ প্রায় করেন। আমরা যারা সমাজে বসবাস করি সকলের উচিৎ মৃত বিশ্বনাথের পরিবারকে ন্যায় বিচার পেতে সহযোগিতা করা। চেয়ারম্যান উদ্যোগ নিলে আমরা পাশে থাকবো।’

তবে সোহেল শাহ বলেন, ‘মহেষের জন্মের আগেই তার বাবা আমাদের বাবা দাদাদের কাছে জমি বিক্রি করেছেন। সেই সূত্রে আমরা জমিটি ভোগদখলে আছি দীর্ঘ অনেক বছর ধরে। মহেষ আমার কাছে জমির সমাধানের জন্য এসেছিলেন। আমি বলেছি, স্থানীয়দের নিয়ে বসে সংশোধন করবো। শুনেছি, তিনি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন। চেয়ারম্যান আমাকে নোটিশ করলে সেখানে যাবো।’

গড়েয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রইসউদ্দীন সাজু বলেন, ‘তিন দিন আগে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন মহেষ চন্দ্র বর্মণ। আমি দুই পক্ষকে নোটিশ করে পরিষদে বসার ব্যবস্থা করবো এবং জমির সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।’
 

মঈনুদ্দীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়