পদ্মায় তীব্র ভাঙন, সরানো হচ্ছে বিদ্যালয়
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ের দক্ষিণ পাড়ার ওপর দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে হুঁমকির মুখে পড়েছে পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়। ভাঙন থেকে বাঁচতে তাই স্কুলটির সব মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। ঝুঁকি মুক্ত রাখতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল ১৯৪৯ সালে। এ বিদ্যালয়েটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়েনের মধ্যবর্তীস্থান দক্ষিণ পাড়ায় অবস্থিত। আগ্রাসী পদ্মার ভাঙনের কবল থেকে মুক্তি পেতে স্কুলটি শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়া চরে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। দক্ষিণপাড়া থেকে নিশি পাড়ার দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার।
নারায়নপুরের বাসিন্দা সাদ্দাম আলী বলেন, ‘প্রতি বছরই পদ্মার ভাঙনে আবাদি জমিসহ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বিলীন হয়। নিঃস্ব হয়েছেন অনেক মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে জিওব্যাগ দিয়ে পদ্মার ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে অনেক জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়া থেকে মুক্তি পাবে।’
পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা লিটন বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়ন ও শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন নিয়ে পদ্মার তীরবর্তী এলাকা। নদীতে ভাঙন শুরু হলে দুই ইউনিয়নের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পদ্মা পাড়ের মানুষ আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে পাকা বাড়ি করেও, অনেকে থাকতে পারেননি। ওইসব বাড়িও পদ্মায় বিলীন হয়েছে। সরকার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করলে অনেক মানুষ ভাঙনের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাবে।’
ভাঙন থেকে বাঁচাতে স্কুল সরিয়ে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ
পাঁকা নারায়নপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়টি শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নের নিশিপাড়ায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এর আগে কয়েকবার নদী ভাঙনের জন্য বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আপাতত শ্রেণি শিক্ষার কার্যক্রম বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও বিদ্যালয়ে শিক্ষার কার্যক্রম চালু হবে। এখানে পাঁকা আর নারায়নপুরের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।’
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হায়াত বলেন, ‘সরজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে স্কুলটি নিশিপাড়া চরে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যালয়টি সরিয়ে না নিলে ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে যেত। বহু টাকার সম্পদের ক্ষতি হতো।’
মেহেদী/ মাসুদ
আরো পড়ুন