ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

৩ হাজার কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণে অবহেলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৭:১৯, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
৩ হাজার কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণে অবহেলা

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। গত এক মাসে অসংখ্য পারিবারের বাড়িঘর ও কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়েছে। নদীর ভাঙন রোধে প্রায় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁধ নির্মাণ শুরু হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে চোখের সামনেই বিস্তীর্ণ জনপথ বিলীন হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্ষার শুরু থেকে মেঘনার ভাঙনে দিশাহারা লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নদী পাড়ের মানুষজন। প্রতিদিন নতুন করে ভাঙছে একের পর এক বসতভিটা। অনেকেই আতঙ্কে সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। তিন যুগ ধরে টেকসই বাঁধ না থাকায় ৪৪ কিলোমিটার এলাকায় প্রতিনিয়ত ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন সময়ে ভাঙন ঠেকাতে প্রকল্প নিলেও তা কোনো কাজে আসেনি বলে অভিযোগ রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসে ৩১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৮৯ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেয় সরকার। এরপর ৯৯ প্যাকেজে ভাগ করে একই বছরের আগস্ট মাসে প্রকল্পের টেন্ডার আহবান করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ২৪ প্যাকেজে ১৫ জন ঠিকাদার টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পায়। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি কমলনগরের সাহেবের হাট এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর মাধ্যমে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরবর্তী এখন পর্যন্ত যতটুকু কাজ হওয়ার কথা ছিল, তার একভাগও সম্পন্ন হয়নি। এছাড়া বালি সংকট দেখিয়ে তিন মাস কাজ বন্ধ রেখেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। বালির সংকট দূর করে জুনের শুরুতে আবারো বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এরপর তা আবারো বন্ধ হয়ে যায়।

কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মজিদ ও পল্লী চিকিৎসক হেলাল উদ্দিন জানান, উপজেলার চরমার্টিন, চৌধুরী বাজার, নাছিরগঞ্জ বাজার, চরজগবন্ধু, চরফলকন, লুধুয়া, চরকালকিনি এবং রামগতি উপজেলার চর আলেক জেন্ডার, রামগতি বাজার, চর আবদুল্লা, বালুরচরসহ বিভিন্ন এলাকায় মেঘনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

রায়পুর উপজেলার বাসিন্দা আফসার কবিরাজ  জানান, উত্তর চর আবাবিল, উত্তর চরবংশী ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে মেঘনা নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে  নদী তীরবর্তী স্থাপনা ও ফসলি জমি। গত ১০ বছরে সহস্রাধিক ঘরবাড়িসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অগণিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি মালিকানাধীন স্থাপনা। ভাঙন প্রতিরোধে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে তীর রাক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানালেও প্রতিশ্রতি পর্যন্ত তা সীমাবদ্ধ রয়েছে। 

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘মেঘনার পানি বৃদ্ধি ও নদীতে স্রোত থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে আপাতত বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৩০ সেপ্টেম্বরে পর আবারো বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’

জাহাঙ্গীর লিটন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়