ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অবিরাম বর্ষণে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পাবনা পৌরবাসী

পাবনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১০:১৪, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
অবিরাম বর্ষণে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগে পাবনা পৌরবাসী

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পাবনা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।  অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা আর পানি নিষ্কাশনের অপ্রতুলতায় একটুখানি বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় পৌর শহরের অনেক সড়ক। জলজটে একাকার হয়ে মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে ওঠে। 

গত সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) ভোররাত থেকে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত অবিরাম বর্ষণে দুর্ভোগে পড়েছেন পৌরবাসী। বেশকিছু এলাকায় পানিবন্দিতে নাকাল বাসিন্দা ও পথচারীরা। 

বুধবার দেখা যায়- পাবনা পৌর এলাকার শালগাড়িয়া, উত্তর শালগাড়িয়া, মুজাহিদ ক্লাব সড়ক, আতাইকুলা সড়ক, রাধানগর, আটুয়া, বৈরামখান সড়ক, বড় বাজার গুড় পট্টি, দিলালপুর পাথরতলা, কালাচাঁদপাড়া, ছোট শালগাড়িয়া, মাঠপাড়া, মোশাররফ ডাক্তারের গলি, নিউ মার্কেট সড়কসহ পৌর এলাকার অধিকাংশ পাড়া মহলার সড়কগুলোতে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। 

এমনও পাড়া মহল্লা রয়েছে, যেখানে কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। সে সব এলাকার মানুষ আরও দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস করছেন। এর মধ্যে অন্যতম একটি মহল্লা ৯ নং ওয়ার্ডের উত্তর শালগাড়িয়ার সরদার পাড়া, আজিজল মেম্বার সড়ক। 

উত্তর শালগাড়িয়া মহল্লার বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, আমাদের মহল্লায় কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। যে কারনে দৈনন্দিন কাজেও আমাদের বিঘ্ন ঘটে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার পাশাপাশি নেই বর্জ্য ফেলার ব্যবস্থা। 

পৌরবাসীর অভিযোগ, ময়লা আবর্জনা ফালানোর স্থায়ী কোন ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ভাবে ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখে। বৃষ্টি হলে এসব ময়লা আবর্জনা সড়কে ছড়িয়ে গিয়ে চলাচলে দেখা দেয় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা। এছাড়াও অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট স্থানে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পৌরবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। 

পৌর এলাকার ১৩ নং ওয়ার্ডের বাবলা তলার বৈরামখান সড়কের বাসিন্দা আহমেদ উল হক বলেন, এই মহল্লার ৩০টি পরিবার সামান্য বৃষ্টি হলেই চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। বাসা থেকে বের হওয়া দায় হয়ে যায়। 

ওই মহল্লার শিক্ষার্থী মারজিয়া ইসলাম মিতু ও নাবিলা তাবাসসুম জানায়, বৃষ্টি হওয়া মানেই সেদিনে স্কুল কলেজে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রয়োজনে জুতা সেন্ডেল খুলে হাতে নিয়ে কাপড় উঁচু করে গন্তব্যে যেতে হয়। আমরা মহল্লাবাসী খুব বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছি। 

শালগাড়িয়া ৭ নং মহল্লার বিদ্যুৎ চক্র কালীবাড়ি মন্দির মহল্লার বাসিন্দা শর্মিলা সিদ্দিকী জানান, সামান্য বৃষ্টির পানি জমলেই আমরা ঘর থেকে বেরুতে পারিনা। এই মহল্লায় কমপক্ষে ৪০টি পরিবার এই সমস্যার মধ্যে রয়েছে। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। পানি শুকিয়ে যাওয়ার উপর নির্ভর করে। 

পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন করার ফলে পৌরবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। পৌর নাগরিক তথা ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা বিক্রেতারা জলাবদ্ধতার কারণে নাজেহাল হচ্ছেন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত পরিকল্পিতভাবে সড়ক ও ড্রেনেজ নির্মাণ করে দ্রুত পানি নিষ্কাশনে পদক্ষেপ জরুরী হয়ে উঠেছে। 

এ বিষয়ে পৌরসভার মেয়র শরীফ উদ্দিন প্রধান বলেন, নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রদানে আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। অসচেতন পৌরবাসী যত্রতত্র পলিথিনসহ ব্যবহ্ত জিনিস ফেলার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও ব্যবসায়ীসহ মাছ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কার্টুন, পলিথিন, মোড়ক ড্রেনের মধ্যে ফেলার কারণে ড্রেন আটকে গিয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। বাড়িওয়ালারা নির্মাণ সামগ্রী ড্রেনের উপরে রাখার কারণেও সমস্যা হচ্ছে। 

মেয়র শরীফ প্রধান বলেন, আমাদের কর্মিরা নিয়মিতভাবে কাজ করছেন। পূর্বের মেয়রদের অপরিকল্পিত কাজগুলো পরিকল্পনার মধ্যে আনতে কিছুটা সময় লাগছে। 

শাহীন/টিপু

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়