ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নদী ভাঙন: ভূমিহীন হয়ে পড়ছে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা

অদিত্য রাসেল, সিরাজগঞ্জ  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২  
নদী ভাঙন: ভূমিহীন হয়ে পড়ছে গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা

দ্রুতগতিতে কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। তীব্র স্রোতের কারণে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এনায়েতপুরের দক্ষিণে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনের ফলে আবাসিক প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামের ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ায় আবারও ভূমিহীন হয়ে পড়ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার কমে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক মাসে শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়নের পাকুরতলা ও জালালপুর গুচ্ছগ্রাম এলাকার প্রায় ৩৪টি ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছয়টি বাড়ি বিলীন হয়। 

ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দা কোহিনুর, আসলাম উদ্দিন, জবেদা বেওয়াসহ অনেকে জানান, যমুনা নদীতে পানি বাড়া ও কমার সময় ভাঙন দেখা দেয়। এতে নদী তীরবর্তী এলাকার সরকারি আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামের ২৩৮টি ঘরের মধ্যে ৯০টি ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। এতে আবাসনের সুবিধাভোগীরা তাদের ঘরের টিন ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। ভূমিহীন মানুষরা সরকারি আশ্রয় পেলেও বর্তমানে যমুনার ভাঙনে আবারও ভূমিহীন হয়ে পড়েছেন। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী ভাঙন কবলিত ৬ কিলোমিটার এলাকায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও ধীরগতির কারণে নদী ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। ভাঙন রোধে তাই দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের দাবি জানান এলাকাবাসী।

জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘ভাঙন এলাকা রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে স্থায়ী বাঁধের কাজ আরো দ্রুত করা প্রয়োজন।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘গত ৪/৫ দিন ওই অঞ্চলে ভাঙন ছিল। তবে এখন পর্যন্ত ভাঙনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। যমুনায় পানি বাড়ার কারণে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করা যাচ্ছে না। পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমলেই আবারো কাজ শুরু হবে।’ 

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘জালালপুর এলাকায় নদী ভাঙনে গুচ্ছগ্রাম ও আবাসন প্রকল্পের ঘর-বাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ার খবর পেয়েছি। শুক্রবার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।‘

প্রসঙ্গত, ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছ গ্রামের ২৩৮টি ঘর নির্মাণ হয়। দীর্ঘদিন ধরে যমুনার ভাঙনে ২৩৮টি ঘরের মধ্যে ১৪৮টি রয়েছে। বাকি ৯০টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঘর-বাড়ি হারানো মানুষগুলোর মধ্যে কেউ কেউ জায়গা-জমি কিনতে পারলেও অনেকেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়